বিবর্ণ রূপ জানান দেয়া শুরু করেছে শীতের বিদায়। গাছে নতুন পাতার সজীবতায়, নতুন ফোটা বাহারি ফুলে এবং কোকিলের কুহু-কুহু সুর জানান দিচ্ছে বসন্ত এসে গেছে! সূর্য হাসিমুখে ঋতুর রাজা বসন্তকে সাথে করে এসেছে জীর্ণতাকে নতুন প্রান দিতে। বসন্তের অবস্থানটা ঠিক শীত এবং গ্রীষ্মের মাঝামাঝি সময়ে এবং যখন কিনা আবহাওয়ার তাপমাত্রা ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পাওয়া শুরু করে।
বাংলা পঞ্জিকার শেষ ঋতু বসন্তের প্রথম দিনটিকে পালন করা হয় “পহেলা ফাল্গুন” অথবা “বসন্ত উৎসব” নামে। এ উৎসব হয়ে উঠেছে বাঙালির সার্বজনীন প্রাণের উৎসবে। শুধু তাই নয়, নাগরিক জীবনেও বইতে শুরু করে ফাগুন হাওয়া। বসন্তকে গণ্য করা হয় নতুন প্রানের প্রতীক হিসেবে। এদিনে শুধু কেবল প্রকৃতি নয় মানুষও সেজে উঠে রঙিন রঙে বসন্ত বরণে।
শুধু বাংলাদেশে নয় বসন্তকে বরণ করে নেবার জন্য ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, আসাম, ত্রিপুরা, ঝাড়খণ্ড ও ওড়িশা সহ অন্যান্য রাজ্যেও উদযাপিত হয় এ দিনটি। বয়সে ছোট থেকে শুরু করে প্রবীন সকলেই মেতে উঠে ফাল্গুন উৎসবে। দিনটিকে আরো উপভোগ্য করে তুলতে আয়োজন করা হয় বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কর্মসূচির।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে আয়োজন করা হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের। এছাড়াও গ্রাম বাংলায় আয়োজিত হয় মেলা, সার্কাস, যাত্রাসহ নানান বাঙালি আয়োজন। গ্রাম্যবধূরা মেতে উঠে পিঠা উৎসবে, যেখানে দেখে মেলে বাঙালীর ঐতিহ্যবাহী পীঠাপুলির।
বসন্তবরণে সাজের ক্ষেত্রে বাঙালি নারীদের প্রথম পছন্দ বাসন্তী রঙ শাড়ি এবং খোঁপায় গাঁদা ফুলের মালা। অপরূপ সাজে সেজে উঠে বাঙ্গালী নারীরা। সাজের ক্ষেত্রে পিছিয়ে থাকেনা ছেলেরাও। হলুদ পাঞ্জাবির সাথে গায়ে জড়ানো থাকে চাদর, ঠিক যেন হুমায়ূন আহমেদের উপন্যাসের চরিত্র।
আধুনিকতার এ যুগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম গুলোতে চলতে থাকে বসন্তের শুভেচ্ছা বিনিময় এবং নিউজফিড জুরে বিরাজমান থাকে প্রাণবন্ত বসন্ত বরণের বর্ণিল ছবিসমুহ।
এ বসন্ত বরণ উপলক্ষ যেন সম্পর্কগুলোকে করে তোলে আরো শক্ত, মধুর ও সৌহার্দ্যপূর্ণ।
এ আমেজ ও আয়োজন কিন্তু বসন্তেই শেষ নয়। একদিন পার হলেই আসবে বিশ্ব ভালবাসা দিবস যাকে বলা হয় “ভ্যালেন্টাইন ডে”।
Sheba.xyz পরিবারের পক্ষ আপনাদের সকলকেই জানাই পহেলা ফাল্গুন এবং সাথে অগ্রিম ভ্যালেন্টাইন ডে-র শুভেচ্ছা।