বাসা পরিবর্তনের কথা ভাবলেই মাথায় আসে হাজারো চিন্তা। বাসার সবকিছু গোছাবো কিভাবে? কখন প্যাকিং শুরু করবো? বাচ্চাকাচ্চা সামাল দিয়ে এতগুলো জিনিস কিভাবে গুছাবো? শিফটিং এর লোক পাবো কোথায়? অফিসের কাজ সামলে শিফটিং কিভাবে করবো? এমন হাজারো টেনশনে দিন পার হয়ে যায়। তবে ছোট ছোট কিছু জিনিস করলেই কিন্তু আপনার বাসা শিফটিং-টা অনেকাংশে সহজ হয়ে যাবে। আসুন জেনে নেই হোম শিফটিংয়ের সময় কোন পাঁচটি বিষয় আপনার খেয়াল রাখা উচিত।
১। একটি চেকলিস্ট তৈরি করুন
দৈনন্দিন জীবনে নানা কাজের জন্য আপনি হয়তো চেকলিস্ট বানিয়েছেন। বিশেষ করে বাজার করতে যাওয়ার সময় সবকিছু যেন মনে থাকে সেজন্য অনেকেই এটি করে থাকেন। অথচ বাসা শিফটিংয়ের সময় এই সাধারণ কাজটি অনেকেই করে না। নতুন বাসায় যাওয়ার আগে একটি পরিপূর্ণ ও গোছানো চেকলিস্ট তৈরি করলে আপনার বাসা পরিবর্তনের প্রক্রিয়াকে আরো সহজ হবে।
চেকলিস্টে কী কী লিখবেন?
- প্যাকিংয়ের জন্য প্রয়োজনীয় যেসব উপকরণ কিনতে হবে: কার্টন বক্স, টেপ, মার্কার, ছালা, বাবল র্যাপ ইত্যাদি। এগুলো লিস্ট করে রাখলে কেনার সময় কোনো কিছু বাদ যাওয়ার সম্ভাবনা থাকেনা।
- বাসার সব ফার্নিচারের একটা পরিপূর্ণ লিস্ট।
- কোন জিনিস কোথায় রাখবেন তার একটি প্ল্যান।
এই কাজটি আপনি খুব সহজেই একটি ডায়েরি বা মোবাইলের নোটস অ্যাপ ব্যবহার করেই করতে পারবেন। প্রতিটি কাজ শেষ হলে তার পাশে টিকচিহ্ন দিয়ে রাখুন।
যাদেরকে আপনি বাসা পরিবর্তন করতে নিয়োগ দিবেন তারা অনেকসময় আপনার চেকলিস্ট ফলো করবেনা। যার ফলে অনেক কিছু হারিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। অনেকসময় ভালো মুভার না থাকায় আমরা এলাকার ভ্যানচালক বা রিকশাওয়ালাদের দিয়ে কাজটি করিয়ে ফেলতে চাই। আনপ্রফেশনাল মুভাররা অনেকসময় সুযোগ বুঝে আপনার কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা আদায়েরও চেষ্টা করে থাকেন। তাই কম সময়ে সুন্দরভাবে হোম শিফটিং করার জন্য আপনি Sheba.xyz এর সাহায্যে নিতে পারেন। আমাদের আছে এক্সপার্ট শিফটিং টিম যারা আপনার বাসার জিনিস প্যাকিং থেকে শুরু করে কাভার্ড ভ্যান দিয়ে সবকিছু নতুন বাসায় উঠিয়ে দিতে সাহায্য করবো। কম খরচে, প্রিমিয়াম হোম শিফটিং সার্ভিস নিতে পারেন আমাদের কাছ থেকে।
২। প্যাকিং করে প্রতিটি প্যাকেটে আলাদা করে লেবেল লাগান
অনেকেই প্যাকিংয়ের সময় কোনো ধরনের লেবেল লাগান না। বাড়ি পরিবর্তনের সময় প্যাকিং যদি অগোছালো হয়, তবে নতুন জায়গায় জিনিস খুঁজে পেতে গেলে প্রতিটি প্যাকেট আলাদা করে খুলতে হয়। এতে বিড়ম্বনা আরো বেড়ে যায়।
এজন্য প্রতিটি প্যাকেটের ওপর কাগজ-কলম দিয়ে লেবেল লাগিয়ে রাখুন। লেবেলে লিখুন:
- কোন ঘরের জিনিস কোন বাক্সে রাখছেন (যেমন, রান্নাঘর, শোবার ঘর)।
- প্যাকেটের ভেতরে কী আছে (যেমন, বই, কাপড়, ইলেকট্রনিকস, কাঁচের জিনিস)
লেবেল লাগিয়ে রাখলে নতুন বাসায় উঠে জিনিসপত্র খুঁজে পেতে আপনার সুবিধা হবে।
৩। নতুন বাসায় যেসব জিনিসের প্রয়োজন সবচেয়ে বেশি হতে পারে, সেসব আগে গোছানোর চেষ্টা করুন
বাসা পরিবর্তনের পরপরই সবকিছু একসাথে গুছিয়ে ফেলা সম্ভব হয় না। তাই জরুরি জিনিসগুলো সবার আগে গুছিয়ে ফেলবেন। এতে করে নতুন বাসায় উঠার পরে আপনি দরকারি জিনিসগুলো হাতের কাছেই পেয়ে যাবেন।
যেসব জিনিসগুলো আগে গোছাবেন তা হলো
- রান্নাঘরের নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস (চুলা, প্লেট, গ্লাস, পাতিল)।
- কার্টনের ভেতর ফাঁকা জায়গাগুলো ফোম বা কাপড় দিয়ে পূরণ করুন, যাতে ভিতরের জিনিসপত্র কোনোভাবে ঝাঁকি না খায়।
- শোবার ঘরের বিছানার চাদর এবং বালিশ।
- চার্জার, টর্চলাইট, এবং মেডিকেল কিট ইত্যাদি।
এই জিনিসগুলো একটি আলাদা প্যাকেটে সংরক্ষণ করুন। প্যাকেটে বড় করে লিখে রাখুন “প্রথমে খোলা হবে” অথবা “জরুরি জিনিস।”
৪। কাঁচের জিনিসগুলো আলাদাভাবে গুছিয়ে নিন
বাসা পরিবর্তনের সময় কাঁচের জিনিসের দিকে বিশেষভাবে খেয়াল রাখতে হবে। এর কারণ হলো কাঁচের থালা-বাসন, গ্লাস, শো পিস এবং আয়না ইত্যাদি ভঙ্গুর হওয়ায় সহজেই ভেঙে যেতে পারে। অনেকসময়ই আপনি যাদের দিয়ে বাসা পরিবর্তনের কাজ করান তারা কাঁচের জিনিসকেও বাকিসব জিনিসের মতোই উঠা-নামা করান। এর ফলে অনেকেরই শখের নানা কাঁচের জিনিস হোম শিফটিং এর সময় ভেঙে যায়।
এই সমস্যার সমাধানে আপনি প্যাকিংয়ের সময় যা যা করতে পারেন –
- বাবল র্যাপ বা পুরোনো পত্রিকা দিয়ে প্রতিটি কাঁচের জিনিসকে ভালো করে মুড়িয়ে নিন।
- কাঁচের জিনিসগুলো শক্ত কার্টনে রাখুন।
- কার্টনের বাইরে “FRAGILE” বা “ভঙ্গুর” লিখে রাখুন, এবং মুভারকে আগে থেকেই ব্যাপারটি জানিয়ে রাখুন।
আপনার হোম শিফটিংয়ের টিম ভালো হলে কাঁচের বা মূল্যবান জিনিস ভাঙার সম্ভাবনা অনেকাংশে কমে যায়।
তাড়াহুড়োতে অনেকেই যেখান সেখান থেকে মুভার ভাড়া করে থাকেন। একজন আনপ্রফেশনাল মুভার এসব ভঙ্গুর পদার্থগুলো যত্ন সহকারে নাড়াচাড়া না করার ফলে আপনার পছন্দের বাসন অথবা শো পিস মুহুর্তেই টুকরো টুকরো হয়ে যেতে পারে। তাই সবসময় Sheba.xyz এর মতো বিশ্বস্ত কোম্পানির কাছ থেকে হোম শিফটিং সার্ভিস নিন। আমাদের হোম শিফটিং এক্সপার্টরা আপনার প্রয়োজনীয় জিনিসগুলোকে বাবল ৱ্যাপিং করে নতুন বাসায় যত্ন সহকারে নিয়ে যাবে। তাই নিরাপদ শিফটিং এর জন্য আমরা হতে পারি আপনার প্রথম পছন্দ।
৫। কোন ফার্নিচার কোথায় থাকবে তা মালপত্র বাসায় উঠানোর আগেই সিদ্ধান্ত নিন
যখন মালপত্র নতুন বাসায় পৌঁছায়, তখন সব ভারী ফার্নিচারগুলো এদিক সেদিক রেখে দিলে পরবর্তীতে সেগুলো সরানো বেশ কষ্টকর হয়। তাছাড়া এতে প্রচুর পরিমাণে সময়ও নষ্ট হয়। সারাদিনের ধকলের পর যদি বারবার ফার্নিচার এদিক ওদিক করতে হয় তাহলে তা আপনার জন্য নিতান্তই সুখকর অভিজ্ঞতা হবে না।
এই সমস্যা যেভাবে সমাধান করবেন তা হলো
- শিফটিংয়ের আগেই নতুন বাসার প্রতিটি রুমের জন্য একটি প্ল্যান তৈরি করুন।
- কোন রুমে কোন আসবাবপত্র রাখবেন তা আগে থেকেই ঠিক করুন।
- আসবাবপত্রের মাপ অনুযায়ী জায়গা আগে থেকেই মেপে রাখুন, যাতে নতুন জায়গায় ফার্নিচারটি বসাতে কোনো সমস্যা না হয়।
হোম শিফটিংয়ের মতো একটি বড় কাজকে পরিকল্পিতভাবে করলে তা শুধু সময়ই সাশ্রয় করবে তা নয় বরং আপনার ওপর থেকে অনেক বড় একটি মানসিক চাপও কমিয়ে দিবে। উপরের পাঁচটি বিষয় মাথায় রেখে কাজ করলে আপনার নতুন বাসায় ওঠার যাত্রা হবে একদম ঝামেলামুক্ত।
Sheba.xyz থেকে হোম শিফটিং সার্ভিস নিন, নিশ্চিন্তে নতুন বাসায় উঠুন ও নতুন জীবন শুরু করুন!