ভ্রমণপিপাসুদের জন্য ২০১৯ বছরটি বয়ে নিয়ে এসেছে ভ্রমনের সুবাতাস। প্রায় প্রতিটি মাসেই রয়েছে কোনও না কোনো কারনে সরকারি ছুটি। ফলে পরিবার পরিজন কিংবা বন্ধু বান্ধব নিয়ে ঘুরতে যাওয়ার প্ল্যানিং করাই যায়!

বর্তমানে ট্যুরিজমে অনেকখানি এগিয়ে গেছে দেশ। প্রতিনিয়তই একের পর এক গড়ে উঠছে নান্দনিক হোটেল এবং রিসোর্ট।

বিদেশী পর্যটকদের আকর্ষণ করার সাথে সাথে শহরের যান্ত্রিক কোলাহল থেকে স্থানীয় ভ্রমনকারীদের সুখ খুঁজে দেওয়াই তাদের মুখ্য উদ্দেশ্য। তাই ছুটি পেলে এখন “কি করা যায়!” প্রশ্নটাকে বিদায় দেওয়াই যায়।

এই ব্লগে স্থান অথবা ছোট বড় আয়তনের হিসাবে না যেয়ে একান্তই আমাদের অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে নান্দনিক এবং সময় কাটানোর জন্য দেশের অসংখ্য হোটেল এবং রিসোর্টের মধ্যে থেকে সেরা তিনটি রিসোর্ট এর বর্ণনা তুলে ধরব আমরা।

সাইরু হিল রিসোর্ট

দেশের ট্যুরিস্ট স্পটগুলোর মধ্যে বান্দরবান-কে এক টুকরো স্বর্গ বলা যায়। এখানে পাহাড়ের সবুজের সাথে আকাশের নীল মিলে এক অনন্য চিত্রপটের সৃষ্টি হয়েছে। সাথে আপনাকে ছুঁয়ে দেয়ার জন্য মেঘের দলেরা তো আছেই!

নীলাচল, নীলগিরির মত জায়গাগুলোতে গেলে যেন মনে হবে এক অন্য জগতে চলে এসেছেন, আর এসবের মাঝখানেই রয়েছে দেশের অন্যতম সুন্দর রিসোর্ট – সাইরু হিল রিসোর্ট।

Sairu Hill Resort, Sairu, Sairu Bandarban

ঢাকা থেকে ২৪৮ কিলোমিটার দূরে এবং বান্দরবান থেকে ২০ কিলোমিটার দূরে (৪৫ মিনিটের দূরত্ব) চিম্বুক রোড এ অবস্থিত এই রিসোর্টটি নিঃসন্দেহে বর্তমানে দেশের সবচেয়ে সুন্দর রিসোর্ট এবং হোটেলগুলোর মধ্যে অন্যতম।  একটি আধুনিক হোটেলে যা যা সুবিধা থাকা উচিত তার সবই আছে এইখানে।

আরো পড়তেঃ জিন্দা পার্ক ভ্রমণ গাইড । খরচ, যাওয়ার উপায় সহ পূর্ণ বৃত্তান্ত

সাইরুর রেস্তোরাতে বসে উপভোগ করতে পারবেন উন্নতমানের খাবার, আর সাথে কমপ্লিমেন্টারি হিসেবে থাকছে সৃষ্টিকর্তার দেওয়া মেঘ আর পাহাড়ের সৌন্দর্য। দূর দিগন্তে দেখা মিলবে বঙ্গোপসাগরের। এ তো গেলো রেস্তোরার খবর। এবার আসা যাক থাকার কথায়।

সাইরু তে রয়েছে ৫ ধরনের রুম এবং ভিলা। প্রিমিয়াম, এক্সিকিউটিভ, সাঙ্গু ভিউ (ছাদ সহ এবং ছাদ ছাড়া) এবং ফ্যামিলি কটেজ। প্রত্যেকটিতেই আছে বারান্দা যেখান থেকে উপভোগ করতে পারবেন নয়নাভিরাম প্রকৃতি। প্রত্যেকটি রুমেই রয়েছে এলসিডি টিভি এবং শীতাতপ ব্যবস্থা।

Car Rentalপ্রয়োজন অনুযায়ী বেছে নিন যেকোনো ধরণের রুম। সাইরু তে আরো রয়েছে বিশাল একটি সুইমিং পুল, যার চারপাশের দৃশ্য হারিয়ে দেবে সৌন্দর্যের সংজ্ঞাকে। এ যেন সবুজের মাঝখানে এক টুকরো নীল সাগর।

এখানে কাটানো একটু সময় ভুলিয়ে দেবে যেকোনো ক্লান্তি। ছবি তোলা যদি কারও শখ হয়ে থাকে তাহলে সাইরু থেকে তাকে ফেরত আনতে ভালোই কষ্ট করতে হবে তার সহযাত্রীদের! এছাড়াও সাইরু তে রয়েছে কনফারেন্স এর জন্য রুম, ড্রাইভারদের থাকার সুব্যবস্থা এবং সুবিশাল পার্কিং স্পেস।

জীবনের সব ঝক্কি ঝামেলা থেকে একটু রেহাই পেতে এর থেকে সুন্দর কোনো জায়গা দেশে খুঁজে পাওয়া সম্ভব কিনা তা আমার জানা নেই। এখানে বসে পাখিদের প্রেম দেখতে দেখতে কখন যে হারিয়ে যাবেন, নিজেও টের পাবেন না।


ভাওয়াল রিসোর্ট

শহরের মানুষগুলোকে একটু শান্তির পরশ দিতে ঢাকার আশেপাশে গড়ে উঠেছে অনেকগুলো নান্দনিক রিসোর্ট। ভাওয়াল রিসোর্ট তাদের মধ্যে অন্যতম। শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ৪৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত গাজীপুরের বরৈপাড়ার মির্জাপুর ইউনিয়নের নলজানী গ্রামে সুবিশাল ৩৫ একর জমির উপর নান্দনিক এই রিসোর্টটি অবস্থিত।

সবুজে পরিবেষ্টিত ভাওয়াল রিসোর্টে যেমন খুঁজে পাওয়া যাবে মনের প্রশান্তি, তেমনই পাওয়া যাবে জীবনকে একটু উপভোগ করার সুযোগ।

Bhawal Resort, Bhawal

ভাওয়াল রিসোর্ট এর প্রধান আকর্ষণ বললে প্রথমেই যার কথা আসবে সেটি এর সুবিশাল সুইমিং পুল! পুরো রিসোর্টটির মাঝ দিয়ে এত সুন্দর ভাবে তৈরী করা হয়েছে এই সুইমিং পুল যেখানে সারাদিন কাটিয়ে দেয়া যাবে। শুধু পুল সাইডে বসেই কাছের মানুষটির সাথে গল্প করতেও ভালো লাগবে এখানে।

সুইমিং পুল ছাড়া অন্য আকর্ষণ বলতে রয়েছে সাইক্লিং, লন টেনিস, ব্যাডমিন্টন, বিলিয়ার্ড, জিমনেশিয়াম, স্পা এবং বারবিকিউ জোন। ছবি তোলার জন্য এই রিসোর্ট এক কথায় অসাধারণ!

এবার আসা যাক থাকা খাওয়ার ব্যবস্থায়। রিসোর্টে প্রবেশ করার সাথে সাথেই এসে যাবে ওয়েলকাম ড্রিঙ্কস। রিসোর্টে মোট ৬১ টি ভিলা রয়েছে যেগুলোকে ৩ টি ভাগে ভাগ করা হয়েছে। এক বেডরুম ভিলা, এক বেডরুম স্যুট, ২ বেডরুম স্যুট।

নিরাপত্তার সকল ব্যবস্থায় রয়েছে প্রত্যেকটি ভিলাতে। এগুলোতে ক্যাটাগরি অনুযায়ী রয়েছে একটি লিভিং বেডরুম, কিং বেডস এবং কুইন বেডস। প্রত্যেকটি ভিলার রুমগুলোই শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত এবং সাথে রয়েছে এলসিডি টিভি।

পছন্দ এবং প্রয়োজন অনুযায়ী বেছে নিন আপনার থাকার জায়গাটিতে। এছাড়া তিনবেলাই রকমারি খাবারের সুব্যবস্থা রয়েছে রিসোর্টটির দারুণভাবে সাজানো রেস্তোরাঁটিতে।

রেস্তোরা তে আরও রয়েছে কমপ্লিমেন্টারি সকালের নাশতা। রিসোর্টে আরও রয়েছে পার্কিং এবং ড্রাইভারদের থাকা খাওয়ার সুব্যবস্থা।

দ্যা প্যালেস লাক্সারি রিসোর্ট

ঢাকার অদূরে চায়ের রাজ্য সিলেটে গড়ে উঠেছে আরেকটি নান্দনিক রিসোর্ট- দ্যা প্যালেস লাক্সারি রিসোর্ট। ঢাকা থেকে ১৭৩ কিলোমিটার দূরে হবিগঞ্জের পুটিজুরী, বাহুবল এলাকায় আঞ্চলিক এবং আধুনিকতার মিশ্রণে গড়ে উঠেছে এই রিসোর্টটি।

The Palace Luxury Resort, Palace Resort

সিলেটের রিসোর্ট বলতেই চোখের সামনে যা ভেসে ওঠে, ঠিক তেমনটাই দ্যা প্যালেস লাক্সারি রিসোর্ট। সবুজে ঘেরা পরিবেশের মাঝে এক টুকরো আধুনিকতার ছোঁয়া। টাওয়ার বিল্ডিং থেকে ভিলা, দুই ধরণের রুমেই থাকার ব্যবস্থা আছে এখানে। পছন্দ এবং প্রয়োজন অনুযায়ী বেছে নিতে পারেন যেকোনো একটি।

এছাড়া বিনোদনের জন্য আরও রয়েছে সাইক্লিং, ট্রেকিং, বোটিং, ফিশিং, সিনেমা জোন এবং খেলাধুলার জন্য রয়েছে আলাদা জায়গা।

এবার আসা যাক খাওয়া দাওয়ায়। দ্যা প্যালেস লাক্সারি রিসোর্টটিতে রয়েছে আলাদা কয়েকটি রেস্তোরা যেগুলো পরিবেশন করে ভিন্ন ধরণের খাবার। তাই আপনি যাই খেতে চান না কেন, সবই পেয়ে যাবেন রিসোর্টটির রেস্তরাঁগুলোতে।  

ফিটনেস এর জন্য রয়েছে জিম, বিশালাকার পুল, টার্কিশ বাথ এবং স্পা সার্ভিস! ফলে শহরের জঞ্জাল ভুলে থাকতে যা যা প্রয়োজন, সবই পাচ্ছেন একই স্থানে।

এছাড়াও দ্যা প্যালেস লাক্সারি রিসোর্টে রয়েছে বিভিন্ন কর্পোরেট মিটিং এবং ইভেন্টস আয়োজনের সুব্যবস্থা। সাথে রয়েছে পার্কিং এবং ড্রাইভারদের থাকার ব্যবস্থা।

Car Rental Ad

উল্লেখিত তিনটি ছাড়াও দেশের বহুল আলোচিত আরও কয়েকটি রিসোর্ট হল – সিলেটের গ্র্যান্ড সুলতান টি রিসোর্ট, সিলেটের দুসাই রিসোর্ট, কক্সবাজারের মারমেইড বিচ রিসোর্ট।

তাহলে চলুন সামনের ছুটিগুলোতে ঘুরে আসি এই মনোরম রিসোর্টগুলো থেকে আর যান্ত্রিকতা থেকে রেহাই দেই নিজেদের মন ও শরীরকে।

কিভাবে আসা যাওয়া করা যায় তার চিন্তা যদি মাথায় আসে তাহলে এখনই ডাউনলোড করে নিন দেশের বৃহত্তম অনলাইন সার্ভিস মার্কেট Sheba.xyz অ্যাপ আর খুঁজে নিন কার রেন্টাল সার্ভিস

 

Leave a comment

Casinos en Argentina con Depósito Mínimo de 1000 ARS