ছুটি কাটাতে পরিবার পরিজন কিংবা বন্ধু বান্ধবদের নিয়ে কোথাও ঘুরতে যাওয়া বাঙালিদের অন্যতম শখ। কিন্তু যতই দিন যাচ্ছে, শহরে বসবাস করা মানুষগুলোর জন্য এই শখটি পূরণ করার সুযোগ ততই কমে যাচ্ছে।
শহর থেকে ক্রমশ কমছে ঘুরতে যাওয়ার স্থানগুলো। আর যেগুলো অবশিষ্ট রয়েছে সেগুলোতে ছুটির দিনে এমনই ভিড় লেগে থাকে যে সেসব জায়গাতে যেয়ে আর একান্তে সময় কাটানোর অবকাশ থাকেনা।
তাই এখন কোনো ছুটি পেলে ঘুরতে ভালোবাসেন এমন লোকেদের মাথায় প্রথমেই আসে গাজীপুরে থাকা রিসোর্ট অথবা পার্কগুলো।গাজীপুরে থাকা রিসোর্ট ও পার্কগুলোর মধ্যে বর্তমানে যেগুলো বহুল আলোচিত তার মধ্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারী পার্ক অন্যতম।
তবে পার্কটি শুধু গাজীপুর সাফারী পার্ক নামেও পরিচিত।
আরো পড়ুনঃ জিন্দা পার্ক ভ্রমণ গাইড
কোথায় অবস্থিত?
ঢাকা থেকে ৪০ কিলোমিটার দূরে গাজীপুর জেলার শ্রীপুর উপজেলাধীন মাওনা ইউনিয়নের বড় রাথুরা মৌজা ও সদর উপজেলার পীরুজালী ইউনিয়নের পীরুজালী মৌজার মধ্যে ৩৮১০ একরের বিশাল এলাকা নিয়ে সাফারী পার্কটি গড়ে উঠেছে।
দেশি বিদেশী বিভিন্ন বিশেষজ্ঞদের তত্বাবধায়নে ২০১১ সালে আন্তর্জাতিক মানের এই পার্কটির নির্মাণ কার্যক্রম চালু হয়।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারী পার্ক মূলত থাইল্যান্ডের সাফারী ওয়ার্ল্ড এবং ইন্দোনেশিয়ার বালি সাফারী পার্কের আদলে তৈরী করা হয়েছে।
পার্কটিকে বিভিন্ন দেশি ও বিদেশী বিভিন্ন বন্যপ্রাণী যেন অবাধে বিচরণ এবং একই সাথে পার্কে ঘুরতে আসা পর্যটকদের চিত্ত বিনোদনের ব্যবস্থা করতে পারে সেভাবেই তৈরী করা হয়েছে।
পার্কটি তৈরির মূল উদ্দেশ্য শাল বনের বন্যপ্রাণী ও উদ্ভিদ বৈচিত্র্য সংরক্ষণ এবং বাংলাদেশের বিরল ও বিলুপ্ত প্রায় বন্যপ্রাণীকে নিজ আবাসস্থলে এবং আবাসস্থলের বাইরে সংরক্ষণ ও উন্নয়ন সাধন করা।
কি কি পাবেন?
এবার আসা যাক পার্কে থাকা উপভোগের ব্যবস্থাগুলোতে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারী পার্কে ঘুরতে আসা পর্যটকগণ উপভোগ করতে পারবেন প্রটেকটেড মিনিবাসে চড়ে অথবা পর্যবেক্ষণ টাওয়ারে উঠে বনাঞ্চলের নয়নাভিরাম সৌন্দর্য ও প্রাকৃতিক পরিবেশে বিচারণরত বিভিন্ন বন্যপ্রাণী যেমন বাঘ, সিংহ, হাতি, সাম্বার, মায়া হরিণ, চিত্রা হরিণ, বানর, হনুমান, ভল্লুক, গয়াল, কুমির ও বিচিত্র পাখির অবাধ বিচরণ।
লেকের ধারে অথবা পাখিশালায় দেখতে পাবেন অসংখ্য অতিথি ও জলজ পাখি। এছাড়াও পার্কে দেখতে পারবেন বেস্টনীতে থাকা বিরল প্রজাতির প্যারা হরিণ।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারী পার্কে আরও রয়েছে তথ্য ও শিক্ষা কেন্দ্র যেখানে ভিডিও প্রামাণ্য চিত্রের মাধ্যমে পার্কটি সম্পর্কে পরিপূর্ন বিবরণ জানা যাবে।
এছাড়াও রয়েছে একটি ন্যাচারেল হিস্ট্রি মিউজিয়াম যেখানে বন্যপ্রাণী ও উদ্ভিদ প্রজাতির বৈচিত্র্য সম্পর্কে পর্য্টকগন, বিশেষ করে ছাত্র-ছাত্রী ও গবেষকগণ বিস্তর ধারণা লাভ করতে পারবেন।
আরো পড়ুনঃ ভাওয়াল রিসোর্ট । ভ্রমন গাইড
প্রবেশ মূল্যঃ
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারী পার্কের প্রবেশ মূল্য প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য ৫০ টাকা, শিক্ষার্থীদের জন্য ২০ টাকা এবং কোর সাফারী পার্ক পরিদর্শনের জন্য প্রাপ্তবয়স্কদের টিকেট পড়বে ১০০ টাকা, শিক্ষার্থীদের জন্য ৫০ টাকা।
এরপর থেকে প্রতিটি ডিসপ্লে এর জন্য আলাদা টিকেট কাটতে হবে যার মূল্য ১০ থেকে ১০০ টাকার মধ্যে।
থাকা খাওয়ার ব্যবস্থাঃ
পার্কে রয়েছে ক্যাফেটেরিয়া যেখান থেকে পর্যটকগণ তাদের খাবারের ব্যবস্থা করে নিতে পারবেন।
সাফারী পার্কটি খোলা থাকে প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত তবে এখানে রাত্রি যাপনের জন্য রয়েছে একটি বিশ্রামাগার।
যোগাযোগঃ
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারী পার্ক কর্তৃপক্ষের সাথে প্রি-বুকিং অথবা থাকা খাওয়া বিষয়ক কোনো প্রয়োজনে যোগাযোগ করে নিতে পারেন 01973000044, 01823000044, 01823004484 নাম্বারগুলোতে।
কিভাবে যাবেন?
এবার আসা যাক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারী পার্কে যাতায়াতের ব্যবস্থায়।
প্রাইভেট কার থাকলে কোনো ঝামেলা ছাড়াই চলে যাওয়া যাবে গাজীপুর সাফারী পার্কে, সাথে পার্কে রয়েছে গাড়ি পার্কিং এর সু-ব্যবস্থা। ফলে গাড়ি রাখা নিয়ে আলাদা চিন্তার কোনো কারণই নেই।
এছাড়াও ঢাকা থেকে বাসে করে বাঘের বাজার পর্যন্ত যেয়ে এরপর সিএনজি অথবা রিকশাযোগে পৌঁছে যেতে পারবেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারী পার্ক।
যারা রেন্ট এ কার সার্ভিস নিয়ে ঘুরে আসতে চান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারী পার্ক, তাদের পাশে রয়েছে দেশের বৃহত্তম অনলাইন সার্ভিস মার্কেট Sheba.xyz।
এখন ঘরে বসেই Sheba.xyz অ্যাপ থেকে আপনার প্রয়োজনীয় সিটসংখ্যা অনুযায়ী পছন্দের রেন্ট এ কার সার্ভিস খুঁজে নিন।
1 Comment