অনেকের কাছেই, ঘরের রেনোভেশন মানে মহা খরচের ব্যাপারে। জেনে নিন একদম কম খরচে এমন কি চারটি জিনিস আছে যা বদলে দিতে পারে আপনার ঘরের চেহারা।
নিজের ঘর মানেই নিজের ব্যক্তিত্বের প্রতিচ্ছবি। তাই ঘরের আনাচে কানাচে কিভাবে নিজের ব্যক্তিত্বের প্রতিচ্ছবি ফুটিয়ে তোলা যায়, তা নিয়েই আমাদের আপ্রাণ প্রচেষ্টা । শৌখিন যারা, হালে ট্রেন্ড-এ কি চলছে তা খুঁজে বেড়াচ্ছেন ইন্টারনেটের পাতায় ।
একটা সময় ছিল যখন ঘরের সাজসজ্জা বলতে শুধুমাত্র ভারি ভারি ফার্নিচার বুঝাতো। সময় বদলেছ। আর বিভিন্ন ফেশন-ট্রেন্ডের পথ পাড়ি দিয়ে এখন চলছে মিনিমাল ফার্নিচারের যুগ। শুধু ফার্নিচারেই না, ‘মিনিমালিস্ট’ ধারণা এখন বাড়ির আর্কিটেকচারাল ডিজাইনেও ঠাই করে নিচ্ছে।
আপনিও কিন্তু চাইলেই, খুব সিম্পল কয়েকটি চেঞ্জ এনেই বদলে ফেলতে পারেন আপনার ঘরের আদল। ফুটিয়ে তুলতে পারেন আপনার রুচিবোধ ও ব্যাক্তিত্ব।
চলুন তবে দেখে নিই, নিজের ঘরের চেহারা বদলে দেয়ার ৪টি সহজ ধাপ।
১। ওয়ালপেপার মানেই নতুনত্ব-
কম খরচে ঘরকে ট্রেন্ডি লুক দিতে ওয়ালপেপারের আসলেই কোন বিকল্প নেই। ওয়াল পেপার দিয়ে ঘর সাজানোর সবচেয়ে বড় সুবিধা হচ্ছে- তা যেকোনো সময় পরিবর্তন করা যায় এবং পরিবর্তনের ঝামেলাটাও খুবই কম।
আমাদের অনেকেরই একই ধরণের ডিজাইন খুব বেশিদিন ভালো লাগে না। হয়তোবা একটা সুন্দর ওয়ালপেপার করিয়েছেন, মাসখানেক পর একই ডিজাইন আর ভালো লাগছে না অথবা বোরিং মনে হচ্ছে। ওয়ালপেপারের আরেকটি সুবিধা হচ্ছে, এরকম একই ডিজাইনে বোরিং মনে হলে কেবল ওয়ালপেপারটা বদলে নিয়েই ঘরের পুরো ডিজাইন-টাই নতুন করে নেয়া যায়।
আর যারা ভাড়া বাড়িতে আছেন, হয়তো বেশ কয়েক দিনের ব্যবহারে দেয়াল ময়লা হয়ে আছে। বাড়িওয়ালাকে বলে ডিস্টেম্পার/প্লাস্টিক পেইন্ট করানো হয়তো একটু সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। এরকম হয়ে থাকলে, ঘর রঙ না করে ওয়ালপেপার লাগিয়ে নিলেই সমস্যার সমাধান হয়ে যায়।
ওয়ালপেপার এর বাজারদর তুলনামূলকভাবে খুবই কম। প্রতি রোল ওয়ালপেপার এর মূল্য বারোশো টাকা থেকে শুরু করে সাড়ে তিন বা চার হাজার টাকা পর্যন্ত আছে।
২। আলোকসজ্জার খেলায় ঘরের পরিবেশ-
অনেকেই হয়তো জানেন না ঘরের পরিপূর্ণ আলোকসজ্জা, ঘরে বসবাসকারী মানুষজন এবং ঘর দুটোর জন্যই কতটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ। উজ্জ্বল ঘর ব্যক্তি মনকে প্রাণবন্ত ও আনন্দ দেয় । আলোকসজ্জা মানে বড়লোকের বিলাসীতা, এই ধারণা থেকে কিন্তু আমরা অনেক আগেই বেরিয়ে এসেছি।
এখন খুব অল্প খরচে আপনি কিনতে পারেন সুন্দর সুন্দর ব্রাকেট লাইট ও ঝাড়বাতি। ঘরে পর্যাপ্ত পরিমাণ আলো থাকলে কিন্তু ঘরটিকে দেখতেও বেশ বড় লাগে। এসব ব্রাকেট লাইট গুলোর বাজারদর ৫০০ থেকে ২০০০ টাকা । আবার ঝাড়বাতি গুলো পাবেন ১০০০ থেকে শুরু করে ৪০০০ টাকার মধ্যে।
৩। স্মার্ট ও স্লিম আসবাবপত্রে স্মার্ট ঘর-
ভারি ভারি ফানিচারের যুগ বদলে যাওয়ায় আজকাল অনেকেই আলমারি একদম পছন্দ করেন না । অনেকে আবার ঘরের জায়গা বাঁচানোর জন্য বড়, ভারী ফানিচার গুলো বাদ দিয়ে দিয়েছেন। যার ফলে কাপড়-চোপড় গুলো স্থান পেয়েছে কোনায় পড়ে থাকা কোনো চেয়ারে, লন্ড্রী বাস্কেটের কিংবা খাটের উপর।
এদিকসেদিক পড়ে থাকায় কাপড় গুলো কিন্তু ঘরের শোভা অনেক কমিয়ে দিচ্ছে। এই কাপড়গুলো ঝামেলা মেটাতে যুগের সাথে তাল মিলিয়ে আপনি নিতে পারেন ছোটখাটো কোনো একটি ওয়ারড্রোব। তিন ফিট বা চার ফিটের একটি ওয়ারড্রব আপনার ঘরে বেশি জায়গা না নিলেও, ঘরের সৌন্দর্যকে কিন্তু বাড়িয়ে দিবে বহুগুণ।
বাহারি রঙ, ডিজাইন, টেক্সচার-এ যেকোনো প্লাইউড দিয়ে বানিয়ে নিতে পারেন আপনার অতি প্রয়োজনীয় ওয়ারড্রোব। এর দাম কিন্তু খুব বেশি না। পছন্দমত বোর্ডে মাত্র আটশ থেকে বারোশো টাকা প্রতি স্কয়ার ফিট খরচ করেই করিয়ে নিতে পারেন এইসব সৌখিন ওয়ারড্রব।
৪। ছোট সোফায় রুচির ছোঁয়া-
বাসার প্রতিটি ঘরেই কিন্তু প্রয়োজন হয় একটু-আধটু বসার জায়গা। কিন্তু ঘরের প্রয়োজনীয় সব আসবাবপত্রের মাঝখানে একটুখানি বসার জন্য একটি ৩/২ সিটের ভারি সোফা রাখা সব সময় মানানসই হয়ে ওঠে না। সেই ক্ষেত্রে শোবার ঘরের কোনায় বা ছোট্ট যেকোনো জায়গায় একটি বিন ব্যাগ রাখতে পারেন।
বসার ঘরে রাখতে পারেন কুশন কাউচ। পুরনো ধাঁচের সোফার মত এসব আসবাব ভারী না হলেও আজকালকার ট্রেন্ডের সাথে খুব মানিয়ে যাবে।
যাদের বড় বারান্দা আছে তারা বারান্দার এক সাইডে বসিয়ে দিতে পারেন ছোট ছোট দুটি চেয়ার বা মোড়া। মাঝখানে থাকলো ছোট্ট একটি টুল। এই ছোট্ট দুটো চেয়ার বা টুল বারান্দাটাকে সম্পূর্ণরূপে বদলে দিতে পারে আপনার পড়ন্ত বিকেলে চায়ের আড্ডার জায়গা হিসেবে। আগেকার দিনের মত ৩/৪ সিটের সোফার বদলে এখন কিন্তু অনেকেই বসার ঘরে ডিভান ব্যবহার করছেন। গদি সহ বা ছাড়া একটি ডিভান-এর মূল্য বর্তমান বাজারে বারো থেকে বিশ হাজার টাকা। আর বিন ব্যাগ গুলো পাবেন ছয় হাজার থেকে দশ হাজারে।
বাসা ছোট হোক বা বড়, মানানসই গৃহসজ্জা কিন্তু সকল বাড়ির একান্ত দাবি। তাই ঘর সাজানোতে কোন কার্পণ্য না করে আজই নেমে পড়ুন। সার্বক্ষণিক তথ্য ও সার্ভিস প্রয়োজনে Sheba.xyz তো আছেই।