গরমের আরাম এসির রক্ষণাবেক্ষণ ও সার্ভিসিং টিপস


দেখতে দেখতে শীত ফুরিয়ে এলো। ক্যালেন্ডারের পাতাও বলছে, প্রকৃতিতে চলছে বসন্তের রেশ। ভোরে আর রাতের দিকের বাতাসটা ঠান্ডা হলেও ধীরে ধীরে সেটা হয়ে উঠছে উষ্ণ। গতবছর আমরা অনেকেই ভেবেছিলাম, লকডাউনের প্রভাবে সামনের বছরের আবহাওয়াটা অন্তত কিছুটা হলেও সহনীয় হবে। কিন্তু কিসের কি! আবহাওয়া বরং হয়ে উঠেছে আরও উষ্ণ। শীতটাও এবার যেন যুতসই হয় নি। দীর্ঘসময় শীতের উপস্থিতি থাকলেও হাঁড়কাঁপানো শীত তুলনামুলক কম পেয়েছি এই বছর। যার কারনে সম্ভবত এই বছরেও গরম তার সর্বশক্তি নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়বে। কাঠ ফাটা রোদে, বা প্রচন্ড ভ্যাপসা গরমে ঘেমে নেয়ে আপনি যখন ভিজে চুপসে একাকার, তখনই আপনার চোখের সামনে ভেসে ওঠে একটা হিমশীতল ঘর। যে ঘরে এসি চলছে কুলকুল করে, আর আপনি মন দিয়ে কাজ করতে পারছেন। এসির কারনে আমাদের জীবন আরামদায়ক হলেও এসির রক্ষনাবেক্ষণ বা সার্ভিসিং নিয়ে আমরা খুব কমই ভাবি। বিশেষ করে শীতের সময়টায়। কথায় আছে, দাঁত থাকতে দাঁতের মর্যাদা বোঝা যায় না। যে কারনে গরমকালের পরম বন্ধু এসিটা শীতকালের প্রায় পুরোটা সময়ই বন্ধ থাকে। গরম চলে আসার পর প্রপার মেইনটেনেন্স না করেই আমরা চালু করে দেই। যার কারনে প্রায়ই ঘটে যায় নানারকম ভয়ংকর দুর্ঘটনা। তাই গরমের শুরুতে এসি চালু করার আগে ঠিকমতো যত্ন নেয়া উচিত। কেন নিয়মিত এসির যত্ন নেয়া উচিত, এসি সার্ভিসিংয়ের খুঁটিনাটি ও কেন এসি সার্ভিসিংটা এক্সপার্ট সার্ভিস প্রোভাইডার দিয়ে করাবেন- এই সব প্রশ্নের বিস্তারিত উত্তর পাবেন এই আর্টিকেলে।

নিয়মিত এসি সার্ভিসিং এর প্রয়োজনীয়তা:

শুধু এসি নয়, যে সব যন্ত্র বা গেজেটের সার্ভিস ছাড়া আপনার চলে না, সেসবের প্রত্যেকটার আলাদা করে যত্ন নেয়া উচিত। এসির ক্ষেত্রে সার্ভিসিংয়ের গুরুত্ব সবচেয়ে বেশি। প্রায়সময়ই আমরা শুনতে পাই বিভিন্ন জায়গায় এসির বিস্ফোরণ থেকে ঘটে গেছে ভয়ানক দুর্ঘটনা। আবার দুর্ঘটনার কথা ভেবে এসি না চালানোটাও সমাধান না। নিয়ন্ত্রণে থাকলে, আর সচেতন হলে এসি থেকে সার্ভিস পাবেন সর্বোচ্চ, পাশাপাশি সেটা টেকসইও হবে দীর্ঘদিন।

এসির দুর্ঘটনাগুলো বিশ্লেষন করে দেখা গেছে যে, বেশিরভাগ দুর্ঘটনার কারন শর্ট সার্কিট। কিন্তু বেশির ভাগ মানুষের ধারণা, কম্প্রেসার বার্স্ট করার কারনে এসির দুর্ঘটনাগুলো হয়ে থাকে। কিন্তু এমন ঘটনা আসলে হাতে গোণা কয়েকটা। আবার এসির আর্থিং করা থাকে না অনেক সময়। কিন্তু এই আর্থিং থাকাটা জরুরী। এসির আর্থিং না থাকলে বজ্রপাতের সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তবে সবচেয়ে ভালো উপায় হচ্ছে, বজ্রপাত ও ঝড়বৃষ্টির সময় এসি না চালানো। এছাড়া কনডেনসার দিকে খেয়াল রাখতে হবে। সেটার ভেতর ধুলোবালি জমলে প্রচুর চাপ তৈরি হতে পারে। আবার কপার পাইপে ব্লক থাকলেও প্রেশার তৈরি হতে পারে। এসির ক্যাবল বা তার রেটিং অনুযায়ী অবশ্যই লাগাতে হবে। এক টনের এসিতে এক টনি ক্যাবল, দেড় টনি এসিতে দেড় টনি ক্যাবল ব্যবহার করতে হবে। এছাড়া যে রুমে এসি ব্যবহার করবেন, সেটার সুইচ বোর্ড ভালো হতে হবে। তা না হলে অনেক সময় সুইচ বোর্ডে হাই কারেন্ট ফ্লো হয়। সেখান থেকে দুর্ঘটনাক্রমে ‘ফায়ার’ হতে পারে। তাই সঠিক ক্যাবল বা তার যদি ব্যবহার না করেন, তাহলে যে কোনো সময় স্পার্ক হতে পারে। আর সামান্য স্পার্ক থেকেই ঘটে যেতে পারে বড় কোনো দুর্ঘটনা।

এসি সার্ভিসিং এর খুঁটিনাটি:

গরমের শুরুতে এসি চালানোর আগে একজন এক্সপার্ট সার্ভিস প্রভাইডারকে দিয়ে অবশ্যই চেকআপ করিয়ে নেয়া উচিত। নিয়মিত ব্যবহারে ও আমাদের দেশের বাতাসে প্রচুর ধুলাবালি থাকায় এসির এয়ার ফিল্টারে ময়লা জমে দ্রুত, বৈদ্যুতিক সংযোগও নড়বড়ে হয়ে যেতে পারে যখন তখন। অনেক দিন বন্ধ থাকার পর চালু করতে গেলে অবশ্যই এসি সংযোগের তার পরীক্ষা করে নেওয়া উচিত। অনেক দিন বন্ধ থাকার পর এসি চালু করলে ভেতর থেকে একধরনের ঘড়ঘড় শব্দ হতে থাকে। টুপটাপ বৃষ্টির মতো অনেকের এসি থেকে পানিও পড়তে শুরু করে। সাধারণত দীর্ঘদিন এসি বন্ধ থাকলে কুলিং বা উষ্ণতা কমিয়ে ঘরকে ঠান্ডা করার ক্ষমতা কমে যায়। এক্ষেত্রে এসির ভেতরের নেট খুলে ধুলোবালি পরিষ্কার করে নেয়া উচিত। তবে কুলিং একেবারেই বন্ধ হয়ে গেলে বুঝে নেবেন, এসির ভেতরের গ্যাস শেষ হয়ে গেছে। তখন গ্যাস রিফিলের জন্য আপনাকে দক্ষ টেকনিশিয়ানের সাহায্য নিতে হবে। তাই গরমের শুরুতেই একবার এসির এয়ার সকেট, বৈদ্যুতিক সংযোগ, ফিল্টার—এসব ঠিকমতো পরীক্ষা করিয়ে নিন। অনেকেই আবার এসিতে ঠিকমতো ভোল্টেজ পান না। এক্ষেত্রে বাড়ির সবগুলো বিদ্যুৎ লাইন চেক করা উচিত। অনেক এসির সিলেকটর সুইচে সমস্যা থাকে। এসি বন্ধ হয়ে যায় হুট করে। সেক্ষেত্রে বাজার থেকে হুবহু একই সিলেকটর সুইচ কিনে এনে লাগাতে হবে। অনেকেই অভিযোগ করেন, এসি চলে ঠিকই কিন্তু ঘর ঠান্ডা হয় না। এটার পেছনে থার্মোস্ট্যাট দায়ী। কখনো কখনো আবার ওভারলোড প্রটেক্টর খারাপ হয়ে যেতে পারে, বা গ্যাস লিকেজের সমস্যা হতে পারে। সেটার জন্যও ঘর কম ঠান্ডা হতে পারে। সেক্ষেত্রে থার্মোস্ট্যাট ও গ্যাস পাইপ- দুটোই পরীক্ষা করে পাল্টে নেয়া উচিত। এছাড়া সব সংযোগ পয়েন্ট নিয়মিত চেক করা উচিত। বারবার ফিউজ কেটে যাওয়াও কিন্তু বিপদের লক্ষণ। এসি লাইন বা মোটরের ভেতরে শর্ট সার্কিট হয়ে এমনটা হতে পারে। প্রয়োজনে ভেতরটা চেক করে ও মোটর পাল্টে এই সমস্যা সমাধান করতে হবে।

এক্সপার্ট সার্ভিস প্রোভাইডার থেকে কেন এসি সার্ভিসিং করাবেন?


একটা সময় ছিলো যখন এসি সার্ভিসিং করাতে গিয়ে নানারকম ঝঁক্কিঝামেলা পোহাতে হতো। কিন্তু ইন্টারনেট সহজলভ্য হবার পর বাংলাদেশে এখন sheba.xyz এর মতো পেশাদার প্রতিষ্ঠান আছে। আমাদের কাছ থেকে আপনার সাধের এসিটা পাবে সবচেয়ে সেরা সার্ভিসটা। নিচে আরেকটু ভেঙ্গে, বিশ্লেষন করে বলার চেষ্টা করছি- কেন sheba.xyz এর মতো এক্সপার্ট সার্ভিস প্রোভাইডার থেকে আপনার এসিটি সার্ভিসিং করাবেন।
জীবনের মূল্য: সর্বপ্রথম এবং সবচেয়ে দামী উত্তরটা হচ্ছে, আপনি এই কাজে প্রফেশনাল নন। এসি সার্ভিসিং কোনো শৌখিন কাজ না। এর সাথে জড়িয়ে আছে অনেকগুলো জীবনের প্রশ্ন। সামান্য এদিক সেদিক হলে বিপদের মুখে পড়বে আপনার ও আপনার প্রিয়জনের মহামূল্যবান জীবন। তাই কিছু টাকা খরচ হলেও অনাকাঙ্খিত দুর্ঘটনা থেকে বাঁচতে এক্সপার্ট সার্ভিস প্রোভাইডার থেকে সার্ভিস নিন।

ঝামেলামুক্ত সার্ভিস: আমাদের থেকে এসি রিপেয়ার সার্ভিস অর্ডার করাটা খুবই সহজ। আপনার এসিটা নিয়ে এখানে সেখানে ঘোরার চেয়ে আমাদের একবার ডেকে করে দেখুন। দক্ষ সার্ভিস প্রোভাইডার নিমিষেই পৌঁছে যাবে আপনার দরজায়।

সাশ্রয়ী: লোকাল এসি সার্ভিস প্রভাইডার বাড়িতে ডেকে আনতে আপনার যত খরচ হবে, তার সমান বা তারচেয়েও কম খরচে আপনি আমাদের এক্সপার্ট এসি রিপেয়ার প্রোফেসনালকে ডাকতে পারবেন। আমাদের দক্ষ এসির টেকনিশিয়ানরা আপনার এসির সমস্যা খুঁজে বের করতে ও সমাধান করতে সক্ষম।

দক্ষ কর্মী: Sheba.xyz এর আছে একদল দক্ষ এসি রিপেয়ার টেকনিশিয়ান। তাদের প্রত্যেকের ব্যাকগ্রাউন্ড যথাযতভাবে পরীক্ষা করে তবেই আমরা কাজে নিয়োগ দেই। ফলে অপরিচিত টেকনিশায়ান ডাকার চেয়ে আমাদের পরীক্ষিত টেকনিশিয়ান বাসায় ডেকে আপনি থাকতে পারবেন নিশ্চিন্তে। সাথে আপনার মূল্যবান এসিটিকে তারা যত্ন নিয়ে পরীক্ষা করবেন। ফলে তাড়াহুড়ায় এসির কোনো ক্ষতি হওয়ার দুর্ভাবনা থেকে আপনি থাকতে পারবেন মুক্ত।

আবহাওয়ার গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য দিয়ে লেখাটা শেষ করতে চাই। গত বছরের ডিসেম্বর মাস ও এই বছরের জানুয়ারি জুড়ে স্বাভাবিকের চেয়ে গড়ে ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি তাপমাত্রা ছিল বাংলাদেশে। ঢাকা শহরে ছিল ২ ডিগ্রি বেশি তাপমাত্রা। আবার এই বছরের আবহাওয়ায় লা নিনা নিয়ে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। তাই সম্ভাব্য উষ্ণতম বছরে আপনার এসিটির যত্ন নিন, বিশেষ দৃষ্টি দিন; বিনিময়ে এটি রাখবে আপনার ঘরকে শীতল ও আরামদায়ক।

Leave a comment

Casinos en Argentina con Depósito Mínimo de 1000 ARS