একজন চাকরিজীবীর জন্য বাসা শিফটিং করা কতটা কঠিন হতে পারে? অনেকেরই মনে এমন প্রশ্ন আসতে পারে। বাসা বাড়ি পরিবর্তন বা শিফটিং এর দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করার মূল চাবিকাঠি হলো সময়ের সঠিক ব্যবহার ও দ্রুত কাজ করা। একজন চাকরিজীবী ব্যক্তিকে তার কর্মজীবন ও ব্যক্তিগত জীবন উভয় দিকেই সমতা রেখে চলতে হয় যা আসলেও খুব কঠিন। বাসা বাড়ি বদল করা সাধারণত একটি জটিল ব্যাপার হলেও একজন চাকরিজীবীর জন্য তা খুব বেশি জটিল।
তাই এ সময় কিছু বিশেষ কৌশল অবলম্বন করলে এবং কিছু বিষয় মাথায় রাখলে এ কাজ অনেকটাই সহজ হয়ে যাবে। চলুন তাহলে আজকের sheba.xyz আলোচনায় জেনে নেয়া যাক চাকরিজীবীদের বাসা শিফটিং এর সময় মাথায় রাখতে হবে এমন ১০টি বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু তথ্য।
১. পূর্ব পরিকল্পনা করা
একজন চাকরিজীবীর ক্ষেত্রে ভাষা শিফটিং করার আগেই কিভাবে কি করতে হবে তার পূর্ব পরিকল্পনা করে রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বাসা শিফটিং এর ক্ষেত্রে পূর্ব পরিকল্পনা করে রাখলে কর্মক্ষেত্রেও নেতিবাচক প্রভাব পড়ে না এবং উভয় দিকেই ভারসাম্য রাখা যায়। সর্বোপরি পূর্ব পরিকল্পনা করে রাখলে বাসা শিফটিং এর কাজটি আরো সহজভাবে করা সম্ভব হয়।
২. নিয়োগকর্তাকে অবহিত করা
মূলত বাসা শিফটিং করা খুবই সময় সাপেক্ষ একটি কাজ তাই কর্মক্ষেত্রে ইতিবাচক প্রভাব বজায় রাখতে অবশ্যই নিয়োগকর্তাকে আগে থেকেই জানিয়ে রাখতে হবে। আপনার বাসা শিফটিং এর সময়সূচি বা যেকোনো ধরনের সমস্যা সম্পর্কে নিয়োগকর্তার সাথে সরাসরি আলোচনা করতে হবে এবং কর্মক্ষেত্রে ইতিবাচক প্রভাব বজায় রাখার জন্য প্রয়োজনে নিয়োগকর্তার সাথে পরামর্শ করে নিতে হবে।
৩. টাইম ম্যানেজমেন্ট করা
একজন চাকরিজীবীর ক্ষেত্রে সকল ধরনের পরিস্থিতিতেই টাইম ম্যানেজমেন্ট করার দক্ষতা থাকা একান্তই গুরুত্বপূর্ণ। টাইম ম্যানেজমেন্ট করার দক্ষতা অর্জন করা খুব একটা সহজ ব্যাপার নয়। বাসা বাড়ি বদল করার কাজ খুব একটা সহজ নয় আর সময়ও লাগে প্রচুর। তাই বাসা শিফটিং এর সময় যাতে কর্মক্ষেত্রে কোনো নেতিবাচক প্রভাব না পড়ে সেজন্য অবশ্যই টাইম ম্যানেজমেন্ট করা জানতে হবে এবং সময়ের সঠিক ব্যবহার করার চেষ্টা করতে হবে।
৪. কাজে নমনীয়তা আনার ব্যবস্থা করা
বাসা শিফটিং এর সময় অন্য কাজ করা বা একাধিক কাজ এক সাথে করা অসম্ভব একটি ব্যাপার হয়ে পড়ে এবং একসাথে একাধিক কাজ করতে গেলে কোনো কাজই সঠিকভাবে করা সম্ভব হয় না। তবে কর্মক্ষেত্রে কাজ করার ধরনে কিছুটা ভিন্নতা আনতে পারলে উভয়দিকেই ভারসাম্য বজায় রাখা সহজ হবে। এক্ষেত্রে আপনি আপনার প্রতিনিধি বা নিয়োগকর্তার সাথে আলোচনা করে কাজে নমনীয়তা আনতে পারেন অর্থাৎ বাসায় থেকে অফিসের কাজ করতে পারেন। এতে করে সামঞ্জস্যপূর্ণ পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে।
৫. গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো নির্বাচন করা
বাসা শিফটিং এর ক্ষেত্রে কর্মক্ষেত্র ও বাসার গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো আগে থেকে নির্বাচন করতে হবে যাতে করে কোনো ধরনের সমস্যার সম্মুখীন না হতে হয়। গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো করার ক্ষেত্রে সময়সীমা নির্ধারন করে নিতে হবে এবং অবশ্যই সময়ের মধ্যে কাজ সম্পন্ন করার ক্ষেত্রে ফোকাস দিতে হবে। গুরুত্বপূর্ণ কাজ গুলো দ্রুত ও আগে করে ফেলতে হবে যাতে করে সময় কম লাগে এবং কোনো অসুবিধায় পড়তে না হয়।
৬. হোম শিফটিং সার্ভিসের সহায়তা নেওয়া
বর্তমানে হোম শিফটিং সার্ভিস বেশ জনপ্রিয়। বিশেষ করে sheba.xyz এর মতো কিছু বিশ্বস্ত সার্ভিস। সেজন্য আপনার বাসা শিফটিং কাজকে সহজ করতে আপনি এমন একটি সার্ভিসের সহায়তা নিতে পারেন, যারা আপনার সকল কাজ ঝামেলাহীনভাবে করে দিবে প্রফেশনালভাবে।
৭. ভারসাম্য বজায় রাখা
কর্মজীবনে কাজের বাধ্যবাধকতা পূরণ করা অপরিহার্য হলেও ব্যক্তিগত জীবনের পারিবারিক চাহিদাকেও অগ্রাহ্য করা সম্ভব নয়। যেকোনো পরিস্থিতিতে তাই কর্মজীবন ও ব্যক্তিগত জীবনকে মিলিয়ে না ফেলে আলাদা আলাদা ভাবে ঠিক রাখতে হবে অর্থাৎ উভয়দিকের ভারসাম্যতা বজায় রাখতে হবে। কর্মক্ষেত্রের গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলোর পাশাপাশি পারিবারিক কাজগুলোকেও গুরুত্ব দিতে হবে এবং সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করতে হবে।
৮. সহকর্মীদের সহায়তা নেওয়া
বাসা শিফটিং খুবই সময় সাপেক্ষ একটি কাজ হওয়ায় এসময় কর্মক্ষেত্রে সময় দেয়া অনেকটাই কঠিন হয়ে পড়ে। তাই আপনার কাজকে সহজ ও ঝামেলামুক্ত করার জন্য সহকর্মীদের সহায়তা নিতে পারেন। আপনার কাজগুলোর মধ্যে কিছু কিছু কাজ তাদের শেয়ার করতে পারেন এবং একে অন্যকে সাহায্য করার মাধ্যমে ভালো সম্পর্কও গড়্র তুলতে পারেন।
৯. প্রতিনিধির সাথে যোগাযোগ করা
বাসা শিফটিং করার ক্ষেত্রে চাকরিজীবীদের অবশ্যই আগে অফিসের প্রতিনিধির সাথে যোগাযোগ করতে হবে এবং অসুবিধা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করতে হবে। প্রয়োজনে প্রতিনিধিকে সমস্যার কথা জানিয়ে ছুটি নিতে হবে যাতে বাসা শিফটিং এর কাজ দ্রুত শেষ করা যায়। এতে করে কর্মক্ষেত্রে ইতিবাচক পরিবেশ বজায় থাকবে এবং প্রতিনিধির সাথেও ভালো সম্পর্ক গড়ে উঠবে।
১০. চেকলিস্ট তৈরি করা
বাসা শিফটিং এর ক্ষেত্রে একটি চেকলিস্ট তৈরি করে নেওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এসময় ব্যক্তিগত ও কর্মজীবন উভয়দিকের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করার জন্য একটি চেকলিস্ট তৈরি করে তাতে কোন সময় কোন কাজ করার প্রয়োজন হবে বা কোন কোন কাজ আগে করা লাগবে এসকল বিষয় বিস্তারিত লিখে রাখতে হবে। এতে করে কোনো কাজ বাদ পড়বে না এবং ভারসাম্য বজায় থাকবে।
১১. দ্রুত কাজ সম্পন্ন করা
কর্মজীবন ও ব্যক্তিগত জীবনের সকল দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করার জন্য এবং উভয়দিকে ভারসাম্য রাখার জন্য দ্রুত কাজ সম্পন্ন করার মনমানসিকতা বা অভ্যাস থাকা খুবই জরুরি। বাসা শিফটিং এর সময় অনেক সময় লাগে এবং এর ফলে অফিসের কাজে ব্যাঘাত ঘটতে পারে তাই দ্রুত কাজ করার দক্ষতা অর্জন করতে হবে। একজন চাকরিজীবী যদি উপরোক্ত ১০টি বিষয় বিস্তারিত ভাবে মাথায় রাখতে পারে এবং সেই অনুযায়ী কাজ করতে পারে তাহলেই খুব সহজেই বাসা শিফটিং এর সময় কর্মক্ষেত্র ও ব্যক্তিগত দিকে সমতা রাখতে সক্ষম হবে।
শেষ কথা
তাহলে চাকরিজীবীদের বাসা শিফটিং এর সময় কোন ১০ টি বিষয় মাথায় রাখা উচিত? একজন চাকরিজীবীর জন্য বাসা শিফটিং এর সময় বিশেষ কিছু বিষয় মাথায় রাখা একান্ত জরুরি কেননা একজন চাকরিজীবীকে বাসা ও অফিস উভয় স্থানেই দায়িত্ব পালন করতে হয় এবং ভারসাম্য বজায় রাখতে হয়। তাই আজকের আলোচিত বিষয়গুলো অনুসরণ করলেই আপনি সফলভাবে বাসা শিফটিং করতে পারবেন।