নারিকেল তেল আমাদের অতি পরিচিত একটি বিশেষ কার্যকরী প্রাকৃতিক উপাদান। নারিকেল থেকে প্রাকৃতিক ভাবে এই তেল সংগ্রহ করে বিভিন্ন কার্যকরী উপাদানের সংমিশ্রণে নারিকেল তেল তৈরি করা হয়। রান্নায় ব্যবহারের পাশাপাশি নারিকেল তেল আমাদের ত্বক ও চুলের যত্নেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। 

নারিকেল তেলের রয়েছে নানা ধরনের উপকারী গুনাগুন যা বলে শেষ করা যাবে না। তবে আমরা অনেকেই নারিকেল তেলের এই উপকারী গুনাগুন গুলো সম্পর্কে যথাযথভাবে অবগত নই। তাই আজকের সেবা ব্লগের আলোচনায় আমরা নারিকেল তেলের উপকারী গুনাগুনগুলোর মধ্যে বিশেষ ১০টি উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে কিছু তথ্য জানবো।

নারিকেল তেলের ১০ টি উপকারিতা হলো-

১. মশ্চরাইজেশন

 

নারিকেল তেল আমাদের ত্বকে একটি প্রাকৃতিক ময়শ্চারাইজার হিসেবে কাজ করে থাকে। এটি আমাদের ত্বকের জন্য একটি চমৎকার মশ্চারাইজার যা ত্বকের শুষ্কতা ও ফ্ল্যাকিনেস প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। নারকেল তেল ত্বককে ভেতর থেকে মশ্চারাইজ করে ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখে এবং আমাদের ত্বককে প্রাণবন্ত করে তোলে।

২. চুল কন্ডিশনিং

আমাদের চুলে ব্যবহারের ক্ষেত্রে নারিকেল তেল একটি অন্যতম প্রাকৃতিক কন্ডিশনার যা চুলকে গভীরভাবে কন্ডিশনিং করে চুলে হাইড্রেশন প্রদান করে থাকে। চুলের কন্ডিশনার হিসেবে নারিকেল তেল ব্যবহারের ফলে চুল ভেতর থেকে মজবুত, প্রাণবন্ত এবং সতেজ থাকে। এটি চুলকে হাইড্রেশন প্রদানের মাধ্যমে সতেজ ও চকচকে করে তোলে।

৩. অ্যান্টি ইনফ্ল্যামেটরিং

প্রাকৃতিকভাবে তৈরিকৃত নারিকেল তেলে রয়েছে অ্যান্টি ইনফ্লেমেটরিং বৈশিষ্ট্য যা ত্বকের যেকোনো ধরনের অস্বস্তি বা প্রদাহ প্রশমিত করতে সহায়তা করে থাকে। অনেক সময় আমাদের ত্বকে নানা ধরনের অসুবিধার কারণে প্রদাহ বা জ্বালাপোড়া করে এবং ত্বক লাল হয়ে যায়। এক্ষেত্রে ত্বকে নারিকেল তেল ব্যবহারের ফলে ত্বকের লাল লাল ভাব, যেকোনো ধরনের জ্বালাপোড়া বা প্রদাহ ইত্যাদি প্রশমিত হয়ে ত্বককে কোমল ও নমনীয় করে তোলে।

৪. অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টিফাঙ্গাল

নারিকেল তেল আমাদের ত্বকে অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টিফাঙ্গাল হিসেবে কাজ করে থাকে। নারিকেল তেলে বিদ্যমান লরিক এসিডে রয়েছে অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টিফাঙ্গাল বৈশিষ্ট্য যা ত্বককে ফাঙ্গাল ও ব্যাকটেরিয়াল সংক্রমণের হাত থেকে রক্ষা করে ত্বকের স্বাভাবিক ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। এই অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টিফাঙ্গাল বৈশিষ্ট্য ত্বকে যেকোনো ধরনের সংক্রমণ প্রতিরোধ করতে সহায়তা করে থাকে।

৫. মেকআপ রিমুভার

একটি প্রাকৃতিক মেকআপ রিমুভার হিসেবে নারিকেল তেল অন্যতম। আমাদের ত্বকে ব্যবহৃত বিভিন্ন ধরনের প্রসাধনি ভেতর থেকে রিমুভ বা উপশম করার জন্য অল্প পরিমাণে নারিকেল তেল ব্যবহার করা যেতে পারে। নারিকেল তেল কঠিন রাসায়নিক প্রসাধনীগুলোকে ভেঙে খুব গভীর থেকে মেকআপ রিমুভ করে এবং পাশাপাশি ত্বকের স্বাস্থ্যকে উন্নত করতে সাহায্য করে থাকে।

 ৬. রোদে পোড়া ভাব দূরীকরণ

আমাদের ত্বকের রোদে পোড়া ভাব দূর করতে নারিকেল তেল খুবই কার্যকরী একটি উপাদান। রোদে পোড়া ত্বকে নারিকেল তেল ব্যবহার করার ফলে এটি ত্বকের লাল লাল ভাব, অস্বস্তি ইত্যাদি উপশম করে ত্বকে শীতলতা প্রদান করে। এটি ত্বকের রোদে পোড়া ভাব দূরীকরণের পাশাপাশি ত্বকের স্বাস্থ্যকে উন্নত করে এবং ত্বকের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা ভেতর থেকে নিরাময় করতে সাহায্য করে।

৭. ন্যাচারাল লিপ বাম

 

নারিকেল তেল আমাদের ঠোঁটের জন্য ন্যাচারাল লিপ বাম হিসেবে কাজ করে থাকে। নিয়মিত ব্যবহারে ঠোঁট ফাটা, শুষ্কতা, ডিহহাইড্রেশন ইত্যাদি প্রতিরোধ করে ঠোঁটকে নরম ও আর্দ্র রাখতে সাহায্য করে। এটি নিয়মিত ব্যবহারের ঠোঁটের কালচে ভাব ও ডেড সেল বা মৃত কোষ দূর হয় এবং ঠোঁটের উজ্জ্বলতা ও নমনীয়তা বজায় রাখে।

৮. অ্যান্টিএজিং

নারিকেল তেলে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্য যা অ্যান্টি এজিং এর ক্ষেত্রে বিশেষভাবে সহায়তা করে থাকে। নারিকেল তেলে বিদ্যমান অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্য আমাদের ত্বককে ফ্রি র‍্যাডিকেলের প্রভাব থেকে রক্ষা করে যা বার্ধক্যের লক্ষণ গুলো হ্রাস করতে বিশেষভাবে সহায়তা করে থাকে। ফ্রি র‍্যাডিকেলের প্রভাবে আমাদের ত্বকে বার্ধক্যের লক্ষণ গুলো দেখা দিতে থাকে এবং এক্ষেত্রে নারিকেল তেল ব্যবহারের ফলে এর অ্যান্টি এজিং বৈশিষ্ট্য বার্ধক্য জনিত লক্ষণগুলো প্রতিরোধ করে ত্বককে উজ্জ্বল ও প্রাণবন্ত করে তোলে।

৯. কিউটিকল কেয়ার

কিউটিকলের যত্নে নারিকেল তেল একটি অন্যতম ও কার্যকরী উপাদান। নিয়মিত সঠিক পরিমাণে কিউটিকলে নারিকেল তেল ব্যবহারের ফলে তা নরম, পুষ্টিকর ও প্রাণবন্ত হয়ে থাকে ; বিশেষ করে নখের ক্ষেত্রে নারিকেল তেল ব্যবহারে খুব ভালো ফলাফল পাওয়া যায়। কিউটিকলের যত্নে তাই নারিকেল তেলের গুরুত্ব অতুলনীয়।

১০. রান্না ও স্বাস্থ্য উপকারীতা

রান্না করার ক্ষেত্রে নারিকেল তেল ব্যবহার করলে তা স্বাস্থ্যের জন্য বেশ উপকারী ভূমিকা পালন করে থাকে। পখাবারে নারিকেল তেল ব্যবহারের ফলে তা কোলেস্ট্রল এর মাত্রা ও বিপাকীয় প্রক্রিয়া উন্নত করার পাশাপাশি আরও বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্য ও সুবিধা দিয়ে থাকে। নিয়মিত নির্দিষ্ট পরিমাণে নারিকেল তেল রান্নায় ব্যবহার করলে তা স্বাস্থ্যের জন্য বেশ উপকারী ও কার্যকরী ভূমিকা পালন করে এবং স্বাস্থ্যকে উন্নত করতেও সাহায্য করে থাকে।

উপরোক্ত উপকারিতাগুলো ছাড়াও প্রাকৃতিকভাবে তৈরিকৃত এই নারিকেল তেলের আরো নানা ধরনের উপকারিতা রয়েছে যা আমাদের ত্বক, চুল ও স্বাস্থ্যকে উন্নত করতে বিশেষভাবে সহায়তা করে থাকে। আর হ্যা,  এখন ঘরে বসে পেশাদার Beauty & Wellness সার্ভিস পেতে পারেন সেবার মাধ্যমে। 

শেষ কথা

নারিকেল থেকে প্রাকৃতিক ভাবে তৈরিকৃত একটি উপকারী তেল হলো নারিকেল তেল যা আমাদের স্বাস্থ্যজ্জল জীবন যাপন করতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে থাকে। নারিকেল তেলের অনেক উপকারী গুনাগুন রয়েছে তবে এটি যথাযথভাবে ব্যবহার করাও খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় কারণ সবার জন্য নারিকেল তেল উপযুক্ত নাও হতে পারে। 

অতিরিক্ত তৈলাক্ত ত্বক এবং সেনসিটিভ স্বাস্থ্যের অধিকারীদের ক্ষেত্রে নারিকেল তেল ব্যবহারে ত্বকে এলার্জি এর মতো নানা ধরনের অসুবিধা হতে পারে। তাই নারিকেল তেল ব্যবহারের পূর্বে অবশ্যই তা আপনার ত্বক এবং স্বাস্থ্যের জন্য উপযুক্ত কিনা তা নিশ্চিত করে নিতে হবে এবং আপনার ত্বকের সাথে যদি তা সামঞ্জস্যপূর্ণ হয় তবেই যথাযথভাবে নারকেল তেল ব্যবহার করে আপনারা এর সুবিধা গুলো উপভোগ করতে পারবেন।

Leave a comment

Casinos en Argentina con Depósito Mínimo de 1000 ARS