হাতের মুঠোয় যখন ইন্টেরিয়র ডিজাইন

ঘরেতে রূপার মন টেকে না যে, তরলা বাঁশীর পারা,
কোন বাতাসেতে ভেসে যেতে চায় হইয়া আপন হারা।

নকশি কাথার মাঠ কাব্যগ্রন্থে পল্লীকবি যে রূপার কথা বলেছেন, তার ঘরে মন টেকে না। সে বাতাসে ভেসে যেতে চায় কেবল। তবে বর্তমান সময়ে এসে রূপার এমন ইচ্ছা থাকলে অবশ্যই সেটাকে মাটিচাপা দিতে হতো। কারণ বাইরের বাতাসে ভেসে আছে করোনার নানারকম ভ্যারিয়েন্ট। এমন বাতাসে ভেসে যাবার চেয়ে ঘরে মন টেকানোই বুদ্ধিমানের কাজ। আর সেই ঘরের ডিজাইনটা যদি হয় নান্দদিক, চোখে দেয় আরাম, মনে দেয় প্রশান্তি- তাহলে তো কোনো কথাই নেই। করোনার পরবর্তী নিউ নরমাল পৃথিবীতে মানুষকে বাইরের চেয়ে ঘরেই বেশি সময় কাটাতে হচ্ছে। এই সময় কাটানোটা আরো বেশি সহসশীল ও উপভোগ্য হয়ে ওঠে যদি ঘরে থাকে একটা মানানসই, যুগোপযোগী ইন্টেরিয়র ডিজাইন। কিন্তু ইন্টেরিয়র ডিজাইনের নাম শুনেই অনেকে আঁতকে ওঠেন। ভাবেন এটা অত্যন্ত ব্যয়বহুল। উচ্চবিত্তরাই কেবল বাড়িতে ইন্টেরিয়র ডিজাইন অ্যাফোর্ট করতে পারেন। কিন্তু সময় বদলেছে অনেক। এখন মধ্যবিত্তরাও নিজের ফ্ল্যাটে  ইন্টেরিয়র ডিজাইন করছেন হরহামেশাই। কিভাবে করছেন, কত খরচে করছেন এবং ইন্টেরিয়র ডিজাইন নিয়ে যত ভুল ধারণা- এইসব কিছু নিয়েই আমাদের আজকের আলোচনা।

 

ইন্টেরিয়র ডিজাইন কী?
ইন্টেরিয়র শব্দটা ল্যাটিন শব্দ, যার অর্থ ভেতর। আর ডিজাইনের অর্থ তো আমরা সবাই জানি- নকশা। ফলে ইন্টেরিয়র ডিজাইনিং এর মানে  হলো অভ্যন্তরীণ নকশা বা অন্দরসজ্জা। অনেকেই স্পেস নষ্ট না করে অফিস বা বাসা সুসজ্জিত করতে চান। এই ডেকোরেটেশনই ইন্টেরিয়র ডিজাইন। ইন্টেরিয়র ডিজাইন বলতে অনেকেই বোঝেন শুধু ঘর সাজানো। কিন্তু ঘর সাজানো ছাড়াও এটার পরিধি আরো ব্যাপক। শুধু ঘর সাজানোকে আপনি ইন্টেরিয়র ডেকোরেশন বলতে পারেন; কিন্তু এর সাথে যথন ডিজাইন শব্দটা যোগ হচ্ছে, সেটার মানে কিন্তু আরো বিস্তৃত। ডিজাইনে অনেক রকম স্ট্রাকচার ও ফর্ম থাকে, যেখানে ডেকোরেশনে থাকে শুধু সারফেস আর ম্যাটেরিয়ালের কাজ।

ইন্টেরিয়র ডিজাইনের মূল লক্ষ্য হচ্ছে যে কোনো স্থাপনার পুরো জায়গা কাজে লাগিয়ে আসবাব, লাইট, গৃহসজ্জাসামগ্রীর যথাযথ ব্যবহারের মাধ্যমে আরামদায়ক ও নান্দনিকভাবে উপস্থাপন করা । এই কাজটা যিনি দক্ষতার সঙ্গে করে থাকেন তিনি ইন্টেরিয়র ডিজাইনার। একসময় আর্কিটেক্টরাই সাধারণত কোনো ভবন নির্মাণের পাশাপাশি তার ইন্টেরিয়র ডিজাইন করতেন। কিন্তু বর্তমানে আর্কিটেকচার ও ইন্টেরিয়র ডিজাইন পৃথকভাবে করা হচ্ছে।

 ইন্টেরিয়র ডিজাইন নিয়ে কয়েকটি কমন প্রশ্ন ও তার উত্তর:

প্রশ্ন: ইন্টেরিয়র ডিজাইন কি খুব ব্যয়বহুল?

উত্তর: মোটেও না। যে কোনো বাজেটেই আপনি ইন্টেরিয়র ডিজাইন করাতে পারবেন। কারণ ইন্টেরিয়র ডিজাইন কাস্টমাইজও করা সম্ভব। রুমের সাইজ ও আপনার চাহিদা অনুযায়ী বাজেট ওঠা নামা করবে। আপনি চাইলেই ঘরের যে কোনো একটি দেয়ালে ইন্টেরিয়র ডিজাইন করে বাকি ঘরের দেয়াল প্লেইন রাখতে পারেন। বা সবগুলো ঘরের পেছনে খরচ না কলে শুধু আপনার বেডরুম বা ড্রয়িংরুমের ডিজাইন করতে পারেন। তাহলেই কিন্তু আপনার খরচ সাশ্রয় হয়ে যাচ্ছে।

প্রশ্ন: আমি নিজেই তো সব বুঝি, তবু কেন ইন্টেরিয়র ডিজাইনার হায়ার করবো?

উত্তর: অনেকেই ভাবেন, ইন্টেরিয়র ডিজাইনার হায়ার করাটা একটা আলাদা ঝামেলা। তারা অযথাই ডিজাইনের খরচ বাড়াবেন।  অথবা  ফর্ম, ফাংশন এবং রঙ নিয়ে যাদের যথেষ্ট জ্ঞান রয়েছে বলে অনেকে নিজেই বাসা বাড়ির ইন্টেরিয়র ডিজাইন করতে চান। কিন্তু এই ধারণের মনোভাব একদমই ঠিক না। আপনি কী চান, কীভাবে তা পাবেন সেই সকল বিষয় আপনার জানা থাকলেও, এমন কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বা তথ্য থাকে যা কেবল একজন ইন্টেরিয়র ডিজাইনারই জানবেন। একজন দক্ষ ইন্টেরিয়র ডিজাইনার আপনাকে সঠিক পদ্ধতিতে বাড়ির জায়গা অনুযায়ী ডিজাইনের প্ল্যান দিতে পারবেন, যেটা একজন এক্সপার্ট ছাড়া অসম্ভব কাজ। অনেকেই এই ভুল করে নিজে নিজে ইন্টেরিয়র ডিজাইন করেন, কিন্তু কাজ এগোনোর পর দেখা যায় বারবার পরিকল্পনা পাল্টাতে হচ্ছে, সাথে যোগ হচ্ছে বাড়তি খরচ। অথচ একটা এক্সপার্ট ডিজাইনার আপনাকে শুধু প্ল্যানই না, সাথে একটা নির্ভুল বাজেট নির্ধারণ করে দেবে, যা আপনার অনিশ্চিত খরচের হাত থেকে নিশ্চিত বাঁচিয়ে দেবে।

ফ্রি ইন্টেরিয়র কন্সালটেন্সি পেতে ক্লিক করুন 

প্রশ্ন: ইন্টেরিয়র ডিজাইন কি শুধু বিশাল বড় স্পেসের জন্যই উপযুক্ত?

উত্তর: অনেকেই ভেবে বসে থাকেন, ইন্টেরিয়র ডিজাইন করার জন্য বাসায় বা অফিসে পর্যাপ্ত জায়গা নেই। এইটা খুবই ভুল একটা ধারণা। একজন ইন্টেরিয়র ডিজাইনারের সাথে আলাপ করলেই আপনি জানতে পারবেন, কম স্পেসের একটা বাসা বা অফিসকেও কিভাবে যথাযথ ডিজাইনের মাধ্যমে ব্যবহারের দিক দিয়ে উপযুক্ত করে তোলা যায়। এমন অনেক ইন্টেরিয়র ডিজাইনার আছেন যারা ছোট স্পেসে কাজ করতে এক্সপার্ট। 

প্রশ্ন: ইন্টেরিয়র ডিজাইনার  কি আমার কথা শুনবে? 

উত্তর: অনেকেই ভাবেন, ইন্টেরিয়র ডিজাইনার তার নিজের মত করে ডিজাইন করেন। গ্রাহকের পছন্দ অপছন্দ একদমই পাত্তা দেন না! এটাও একদমই ভুল ধারণা! কারণ ইন্টেরিয়র ডিজাইনাররা ক্লায়েন্টদের পছন্দ-অপছন্দ মাথায় রেখেই কাজে নামেন। দিনশেষে ক্লাইন্টই সেখানে থাকবেন, তিনিই পেমেন্ট করবেন। তাই ক্লায়েন্টের মতামত নিয়ে তবেই ঘরের সকল কাজ করা হয়।

প্রশ্ন: ইন্টেরিয়র ডিজাইন কি শুধু বাসা বাড়ির জন্যই?

উত্তর: ইন্টেরিয়র ডিজাইন বলতেই অনেকে ভাবেন, শুধু বাসা বাড়ির ডিজাইন। এটা একসময় সত্যি হলেও এখন সময় পাল্টেছে। মানুষ বাসা বাড়ির পাশাপাশি অফিস এবং কমার্শিয়াল স্পেসেও ইন্টেরিয়র ডিজাইনার হায়ার করছেন। ফলে অফিস বা বিভিন্ন কমার্শিয়াল স্পেসে ইন্টেরিয়র ডিজাইন  জরুরী হয়ে পড়েছে। অনেকেই চান নিজের স্টাইল বা রুচি অনুযায়ী অফিস বা কমার্শিয়াল স্পেস সাজুক।  ফলে এই ধরনের ডিজাইনের চাহিদাও দিনকে দিন বাড়ছে। 

ইন্টেরিয়র ডিজাইনারের কাজ কি?

  • নিয়মতান্ত্রিক পদ্ধতিতে বাসার স্পেস, আলো অনুযায়ী বাসা, অফিস, দোকান, রেস্টুরেন্ট ইত্যাদির সঠিক নকশা তৈরি করা,
  • ডিজাইন বাস্তবায়নের জন্য যে যে ম্যাটেরিয়ালস লাগবে, তার একটা সম্ভাব্য বাজেট তৈরি করা
  • ডিজাইন ফুটিয়ে তুলতে যারা কাজ করবেন তাদের সাথে স্থপতি ও অন্যান্য সংশ্লিষ্ট কর্মীদের সমন্বয় করা,
  • প্রয়োজনীয় কিন্তু সাধ্যের ভেতর আছে এমন ম্যাটেরিয়াল কেনার জন্য সংশ্লিষ্ট ভেন্যু রিসার্চ করা
  • সর্বোপরী প্রজেক্ট সুপারভাইজ করা

 

কোথায় পাবেন ইন্টেরিয়র ডিজাইনার?
আমাদের দেশেই প্রচুর ইন্টেরিয়র কোম্পানী আছে যারা আপনার চাহিদা অনুযায়ী বাসা বা অফিস সাজিয়ে দিতে সক্ষম। তবে এসব কোম্পানীর অভিজ্ঞতা ও খরচ নিয়ে অনেকের ভেতরেই দুশ্চিন্তা কাজ করে। এক্ষেত্রে Sheba.xyz এর ওপর আপনি নিশ্চিন্তে ভরসা রাখতে পারেন। সার্ভিস বুক করলেই আমাদের একজন এক্সপার্ট ডিজাইনার আপনার বাসা বা অফিস ভিজিট করবেন। স্পেস মেজারমেন্ট করে এরপর আপনাকে একটা কাজ ও খরচ সম্পর্কে জানানো হবে। আপনি সম্মতি দিলে নির্দিষ্ট স্কেজুয়েল অনুযায়ী কাজ শুরু ও শেষ করে আপনাকে সবকিছু বুঝিয়ে দেয়া হবে। ফলে আপনি সবদিক থেকে থাকতে পারছেন নিশ্চিন্ত।

নিচের সার্ভিসগুলো থেকে আপনি প্রয়োজনীয়  ইন্টারিয়র ডিজাইন বেছে নিতে পারবেন।

  • কেবিনেট ডিজাইন
  • ফলস সিলিং ডিজাইন
  • ওয়ার্ক স্টেশন ডিজাইন
  • ফোল্ডিং ডোর মেকিং
  • রিটেইল শপ ও স্টোর ডিজাইন

কেন Sheba.xyz থেকে ইন্টেরিয়র ডিজাইন সার্ভিস নেবেন?

  • আমাদের সাথে আছেন বেস্ট ইন্টেরিয়র এক্সপার্ট প্রফেশনালসস্থপতিবিদরা। এবং তাদের প্রত্যেকের ব্যাকগ্রাউন্ড ও পোর্টফোলিও আমাদের কাছে পরীক্ষিত।
  • আমরা সর্বোচ্চ মান বজায় রেখে নির্দিষ্ট সময় পর সার্ভিস হস্তান্তর করি
  • আমরা যে সব প্রোডাক্ট ব্যবহারের প্রতিশ্রুতি দেই সেটাই ব্যবহার করি
  • প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি আমরা নিজেরাই  সাইটে নিয়ে যাই
  • আমরা নির্দিষ্ট সময় শেষে কাজ সম্পন্ন করে ক্লায়েন্টকে বুঝিয়ে দেই
  • আমাদের সার্ভিসে কোনো হিডেন চার্জ বা কস্ট নেই
  • আমাদের আছে ১২ মাস পর্যন্ত ইএমআই সুবিধা
  • কাস্টমারের কোনো ক্ষতি হলে আমরা সেটা পূরণে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

যে কোনো দেশের এই ইন্টেরিয়র ডিজাইন ব্যাপারটি আসলে ঠিক কেমন হবে, তা নির্ধারিত হয় সেই দেশের ভৌগোলিক অবস্থান অর্থাৎ শীত অথবা গ্রীষ্ম প্রধান কিনা, ওই দেশের ঐতিহ্য এবং ব্যক্তিগত রুচিবোধের ওপর। বাংলাদেশে গত দুই দশকে বছরে মানুষের সৌখিনতায় এসেছে বৈপ্লবিক পরিবর্তন। সবাই চাইছে তার বাসাবাড়ির ভেতরটা রুচিশীল ভাবে সাজাতে। একজন আর্কিটেক্ট একটি বাড়ি নির্মাণ করেন বেসিক স্ট্রাকচার অনুযায়ী। কিন্তু যারা সেই বাড়িতে থাকবেন, তারা নিজেদের রুচি, পেশা, ঐতিহ্য, ক্রয়ক্ষমতা ইত্যাদির সমন্বয়ে বাড়ির ইন্টেরিয়র ডিজাইন সম্পন্ন করেন। সেই প্রবণতা ইদানীং কমার্শিয়াল স্পেসেও ছড়িয়ে পড়েছে। তাই যুগের সাথে তাল মিলিয়ে আপনার চাহিদা অনুযায়ী ইন্টেরিয়র ডিজাইনটি করিয়ে নিন Sheba.xyz এর মাধ্যমে। বিস্তারিত জানতে ক্লিক বা কল করতে পারেন 16516 নাম্বারে।

Leave a comment

Casinos en Argentina con Depósito Mínimo de 1000 ARS