সম্প্রতি করোনাভাইরাস (COVID- 19) আতঙ্কে আক্রান্ত গোটা বিশ্ব। ইতিমধ্যেই বিশ্বের প্রায় ৮৬টিরও বেশি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে করোনাভাইরাস। বাংলাদেশেও এর অস্তিত্ব পাওয়া গেছে, যদিও তা এখনো ছড়ায়নি। তবে করোনাভাইরাস না ছড়ালেও, এর আতঙ্ক ইতিমধ্যেই আমাদের দেশেও ছড়িয়ে গেছে। মুখে মুখে ছড়িয়ে যাচ্ছে অনেক ভুল ধারণা। 

Covid19

আতঙ্ক নয়, এখন প্রয়োজন সতর্কতার। জেনে রাখুন, প্রতিরোধের জন্যই কিন্তু সব ধরণের সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে, আতঙ্ক ছড়ানোর জন্য নয়। সব ধরণের সতর্কতামূলক ব্যবস্থা এবং প্রতিরোধে করণীয় যা যা আছে, সেগুলো মেনে চললেই করোনাভাইরাস থেকে নিজেকে রক্ষা করা সম্ভব। এক্ষেত্রে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO)-এর কিছু নির্দিষ্ট নীতিমালা ও প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা রয়েছে। 

জেনে নিন, করোনাভাইরাস-এর লক্ষণ, সংক্রমণ ও প্রতিরোধে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO)-এর নির্দেশনা।

করোনাভাইরাস আক্রান্তের লক্ষণ- 

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO)-এর তথ্য অনুযায়ী, করোনাভাইরাস আক্রান্ত হবার ১৪ দিনের মাঝে এর লক্ষণ-সমূহ দেখা যাবে। করোনাভাইরাস আক্রান্ত হবার প্রধান লক্ষণ-গুলো হচ্ছে-

১- সংক্রমণের প্রথম সপ্তাহে সাধারণ জ্বর, শুকনো কাশি, মাথা ব্যাথা ও শরীর ব্যাথা শুরু হবে। 

২- সংক্রমণের দ্বিতীয় সপ্তাহে শ্বাসকষ্ট শুরু হবে।

তবে লক্ষ্য রাখবেন, সাধারণ ফ্লু-এর ক্ষেত্রেও প্রায় একই ধরণের লক্ষণ দেখা যায়। বাংলাদেশের আবহাওয়া ও জলবায়ু বিবেচনা করলে বছরের এ সময়টায় ফ্লু হওয়াটাও বেশ স্বাভাবিক। তাই জ্বর-কাশির লক্ষণ দেখা দিলেই করোনাভাইরাস ভেবে আতঙ্কিত হবার কোন কারণ নেই। লক্ষণ-গুলো দেখা দিলেই চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়াটাই হবে করণীয়। 

করোনাভাইরাস সংক্রমণ- 

করোনাভাইরাস প্রধানত বায়ুবাহিত, তাই আক্রান্ত ব্যক্তির হাঁচি-কাশির মাধ্যমে এটি ছড়াতে পারে। এছাড়াও আক্রান্ত ব্যক্তির স্পর্শের মাধ্যমেও ভাইরাস-টি আক্রান্ত ব্যক্তির থেকে আরেকজনের মাঝে সংক্রমিত হতে পারে। 

করোনাভাইরাস প্রতিরোধ- 

বিশেষজ্ঞদের মতে, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতাই করোনাভাইরাস প্রতিরোধে প্রথম ও প্রধান করণীয়। এক্ষেত্রে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) যে নির্দেশনা দিয়েছে সেগুলো হোলো- 

১- নিয়মিত সাবান অথবা হ্যান্ডস্যানিটাইজার ব্যবহার করে হাত পরিষ্কার রাখা।

২- হাঁচি-কাশির সময় হাত দিয়ে সরাসরি মুখ না ঢেকে কনুইয়ের ভাঁজে মুখ ঢেকে নেয়া অথবা টিস্যু পেপার ব্যবহার করা। এক্ষেত্রে লক্ষ্য রাখুন, টিস্যু পেপার ব্যবহার করলে তা যেন যেখানে-সেখানে না ফেলে ট্র্যাশবিন-এ ফেলা হয়। না হলে নোংরা টিস্যু থেকে করোনাভাইরাস ছড়াতে পারে। 

৩- জ্বর, হাঁচি/কাশি আক্রান্ত ব্যক্তিদের কাছ থেকে কিছুটা দূরত্ব বজায় রেখে চলা। করোনাভাইরাস যেহেতু শারীরিক সংস্পর্শের জন্যও ছড়াতে পারে, তাই জ্বর, হাঁচি/কাশি আক্রান্ত ব্যক্তিদের সাথে হাত মেলানো অথবা কোলাকুলি থেকে একটু বিরত থাকাও সতর্কতারই অংশ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO)-এর নির্দেশনা অনুযায়ী জ্বর, হাঁচি/কাশি আক্রান্ত ব্যক্তিদের থেকে অন্তত ২ মিটার (৩ ফিট) দূরত্ব বজায় রাখা শ্রেয়।

৪-  জ্বর, হাঁচি/কাশি-তে আক্রান্ত হলে দেরি না করে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া। 

৫- জনবহুল স্থানে চলাফেরার ক্ষেত্রে ফেস-মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। এক্ষেত্রে লক্ষ্য রাখতে হবে, শুধুমাত্র মাস্ক ব্যবহার করাটাই করোনাভাইরাস থেকে পুরোপুরি সুরক্ষা পাওয়া যাবে না। তবুও সাবধানতার জন্য মাস্ক ব্যবহার করা যেতে পারে। 

উল্লেখ্য, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার-এর স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ইতিমধ্যেই করোনাভাইরাস সংক্রান্ত জরুরি হটলাইন নম্বর-এর ঘোষণা দিয়েছে। করোনাভাইরাস আক্রান্ত সন্দেহ হলে স্বাস্থ্য অধিদফতরের কন্ট্রোল রুমের হটলাইন ০১৯৩৭১১০০১১, ০১৯৩৭০০০৯১১, ০১৯২৭৭১১৭৮৪ ও ০১৯২৭৭১১৭৮৫ এ যোগাযোগের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। 

জেনে রাখুন, করোনাভাইরাস সংক্রামক হলেও পর্যাপ্ত চিকিৎসা ও সতর্কতায় সেরে যায়। এর ফলে মৃত্যুর খবর পাওয়া গেলেও তার থেকেও বেশি সংখ্যক লোক পুরোপুরি সুস্থ হয়েছে।

তাই করোনাভাইরাস নিয়ে নিজে আতঙ্কিত হয়ে, অন্যের মাঝেও আতঙ্ক ছড়ানোর কোন কারণ নেই। 

সুস্থ থাকুন, নিশ্চিন্ত থাকুন। 

Leave a comment

Casinos en Argentina con Depósito Mínimo de 1000 ARS