আপনি কি জানেন False Ceiling কী? বাংলাদেশে এর দাম কেমন? ফলস সিলিং সাধারণত আমাদের বাড়ির ঘরের প্রধান ছাদের নিচে ইনস্টল করা হয়ে থাকে। এটি উপরের ফ্লোর স্লাবের চেয়ে নিচু হয়। সাধারণত কোন অসুন্দর নির্মাণ অংশ ঢেকে রাখার জন্য ফলস সেলিং ব্যবহার করা হয়। বিভিন্ন ধরনের অফিস, শোরুম বা বেসমেন্টে বর্তমানে ফল সেলিং এর ব্যবহার অহরহ দেখা যায়। 

নিচের আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়লে ফলস সেলিং এর ব্যাপারে বিস্তারিত ধারণা পাবেন এবং বাংলাদেশে বর্তমানে এর দাম কেমন সে সম্পর্কে জানতে পারবেন। চলুন তাহলে কথা না বাড়িয়ে আজকের সেবা ব্লগে বিস্তারিত আলোচনার মাধ্যমে জেনে নেওয়া যাক False Ceiling কী? বাংলাদেশে এর দাম কেমন?

False Ceiling কী? 

ফলস সেলিং হচ্ছে প্রধান ছাদের নিচে অন্য আরেকটি সিলিং যা আমাদের ঘরে সৌন্দর্যকে বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করে। False Ceiling তৈরি করা হয়ে থাকে বিভিন্ন লাইট ওয়েট উপকরণ যেমন প্লাস্টার বোর্ড বা জিপসামের মতো উপকরণ দিয়ে। ফলস সিলিং মূল সিলিং থেকে মেটাল গ্রিড সিস্টেম ব্যবহার করে তৈরি করা হয়। সাধারণত মানুষ ফলস সিলিং ব্যবহার করে থাকে ঘরের নান্দনিকতা এবং সৌন্দর্যকে আরও বেশি বাড়িয়ে তোলার জন্য। তবে আপনি চাইলে ঘরের ছাদের বিভিন্ন কম সুন্দর জায়গা যেমন তার, পাইপ অথবা অন্যান্য ইউটিলিটি লুকানোর জন্য ফলস সিলিং  ব্যবহার করতে পারেন।

ফলস সিলিং-এর প্রকারভেদ ও দাম

সাধারণত ফিনিশিং উপকরণের উপর ভিত্তি করে False Ceiling বিভিন্ন প্রকার হয়ে থাকে। আবার ফলস সিলিং এর কোয়ালিটির উপর নির্ভর করে এর দাম নির্ধারণ করা হয। যেমন:

১. কাঠের ফলস সিলিং (Wooden False Ceilings)

কাঠের ফলস সিলিং আপনার বাড়িতে দিবে একটি অসাধারণ প্রাকৃতিক লুক। যেকোনো বাসস্থানকে আরামদায়ক করার জন্য কাঠের ফলস সিলিং বেস্ট। উন্নত মানের কাঠের ফলস সিলিং অনেক দিন টেকসই হয়। কাঠের ফলস সিলিং এর দাম কাঠের উপরে নির্ভর করে। সাধারণ কাঠের ফলস সিলিং প্রতি বর্গফুট ২০০ টাকায় পাওয়া যায় আর যদি উন্নত মানের কাঠের ফল সিলিং ব্যবহার করতে চান তাহলে প্রতি বর্গফুটের জন্য কমপক্ষে ১৫০০ টাকা বাজেট রাখা উচিত। 

২. পিভিসি ফলস  সিলিং (PVC False Ceilings)

পলি ভিনাইল ক্লোরাইড এর সংক্ষিপ্ত রূপ হচ্ছে পিভিসি। এটি পানি প্রতিরোধী তাই মানুষের কাছে এটি খুবই জনপ্রিয়। সবচাইতে সাশ্রয়ী ফলস সিলিং এর মধ্যে পিভিসি অন্যতম আর এর ইনস্টলেশন প্রক্রিয়াও খুব সহজ। এটি যেমন লাইট ওয়েট তেমন টেকসই। এর দাম সর্বনিম্ন ৭০ টাকা বর্গফুট থেকে শুরু করে  সর্বোচ্চ ১৬০ টাকা বর্গফুট পর্যন্ত হতে পারে।

৩. জিপসাম বোর্ড ফলস সিলিং (Gypsum Board False Ceilings)

জিপসাম বোর্ড ফলস সেলিং হচ্ছে প্রিফেব্রিকেটেড যা কোনরকম ছাচ নির্মাণ বা পানির সাথে মেশানো ছাড়াই সরাসরি ইন্সটল করা যায়।  জিপসাম বোর্ড ফলস সিলিং এর দাম সর্বনিম্ন ৭০ টাকা প্রতি বর্গফুট থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ৩০০ টাকা প্রতি বর্গফুট পর্যন্ত হয়ে থাকে।

৪. প্লাস্টার অব প্যারিস ফলস সিলিং (Plaster of Paris False Ceilings)

বিশ্বের সর্বাধিক ব্যবহৃত ফলস সিলিং উপাদান গুলোর মধ্যে প্লাস্টার অফ প্যারিস ফলস সেলিং একটি। এর সংক্ষিপ্ত রূপ হচ্ছে পিওপি। এটি দীর্ঘদিন স্থায়ী হয় কোন রকম রক্ষণাবেক্ষণ ছাড়াই। এর নির্মাণাধীন ব্যয়ও খুব বেশি নয়। এছাড়াও মানুষ চাইলে পছন্দের ডিজাইন অনুযায়ী সহজেই এটি ছাচে ফেলে তৈরি করে নিতে পারে। 

এর দামও আপনার নাগালের মধ্যে। এটি সর্বনিম্ন ৫৫ টাকা বর্গফুট থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ৩০০ টাকা বর্গফুট পর্যন্ত হয়ে থাকে।

৫. গ্লাস ফলস সিলিং (Fibre Glass False Ceilings)

গ্লাস ফলস সিলিং দেখতে খুবই চমৎকার এবং আকর্ষণীয় হলেও এটি খুবই ব্যয়বহুল। এটি সাধারণত বাণিজ্যিক এবং শিল্প স্থানগুলোতে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। এটি যে কোন জায়গাকে একটি প্রিমিয়াম লুক দিতে সক্ষম। গ্লাস ফলস সেলিং এর দাম অন্যান্য সব ফলস সিলিং এর চাইতে অনেক বেশি। এটি ইন্সটল করতে চাইলে আপনাকে প্রতি বর্গফুটের জন্য সর্বনিম্ন ৫০০ টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত বাজেট রাখতে হবে।

৬. মেটাল ফলস সিলিং (Metal False Ceilings)

সহজলভ্য এবং যেকোনো আকারে তৈরি করার উপাদান হিসেবে মেটাল ফলস সিলিং বেস্ট। এগুলোর স্থায়িত্ব অন্যান্য ফলস সিলিং এর চাইতে অনেক অনেক বেশি হয়। মেটাল ফলস সিলিং সাধারণত বাণিজ্যক সেটিংস এর জন্য উপযোগী। এই ধরনের ফলস সিলিং অনেক টেকসই এবং শক্তিশালী হয়ে থাকে। এর দাম অন্যান্য ফলস সিলিং এর তুলনায় একটু বেশি। এর খরচ প্রতি বর্গফুট ১৫০ টাকা থেকে শুরু করে ২০০০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে।

বিভিন্ন রকম False Ceiling ডিজাইন

    • পেরিফেরাল ফলস সিলিং ডিজাইন: যাদের ঘরে জায়গা কম তাদের জন্য এই ডিজাইনটি উপযুক্ত। এটি ঘরের প্রান্ত বরাবর প্রসারিত। এই ডিজাইনটির মধ্যে আপনি চাইলে ঝাড়বাতিও যোগ করতে পারবেন।
    • জ্যামিতিক ফলস সিলিং ডিজাইন: জ্যামিতিক ফলস সিলিং ডিজাইন তৈরি করতে হলে আপনাকে অবশ্যই এর প্রতিটি অংশে ঝুলন্ত প্যানেল ব্যবহার করতে হবে।

 

  • ল্যাটিসওয়ার্ক ফলস সিলিং ডিজাইন: এই ডিজাইনটি আপনার ঘরের সৌন্দর্যকে আরও দ্বিগুণ বাড়িয়ে তুলতে সক্ষম। একটি সূক্ষ্ম উপায়ে নির্মাণ করতে হয়। এটি আপনার ঘরকে করে তুলবে অনেক বেশি নান্দনিক এবং আনন্দদায়ক।
  • ইনভার্টেড কোভ ফলস সিলিং ডিজাইন: যে কোন স্থানের উচ্চ সিলিং কমানোর জন্য খুবই দুর্দান্ত একটি ফলস সিলিং ডিজাইন হচ্ছে ইনভার্টেড কোভ। এটি পরিবেষ্টিত আলোর জন্য একটি আদর্শ ফলস সিলিং ডিজাইন। 
  • কাঠের স্লট ফলস সিলিং ডিজাইন: আপনি যদি ঘরে একটি রাজকীয় এবং মহিমান্বিত লুক দিতে চান তাহলে কাঠের স্লট ফলস সিলিং ব্যবহার করতে পারেন। যদিও এর খরচ অন্যান্য ফল সিলিং এর তুলনায় বেশি হবে তবে এটি আপনার ঘরকে আরো বেশি আকর্ষণীয় করে তুলবে।
  • কার্ভ সহ ফলস সিলিং ডিজাইন: আপনার বসার ঘরটিকে অনেক বেশি বিলাসবহুল লুক দিতে চাইলে কারসহ ফলস সিলিং ডিজাইন ব্যবহার করতে পারেন। এই ডিজাইনটি বড় এবং খোলা স্থানের জন্য বেশি উপযোগী।

 

উপসংহার

উপরোক্ত আর্টিকেলটি যদি মনোযোগ সহকারে পড়ে থাকেন তাহলে আপনি নিশ্চয়ই এতক্ষণে False Ceiling কী? বাংলাদেশে এর দাম কেমন এবং কি কি ডিজাইন করতে পারেন সে সম্পর্কে বিস্তারিত  জানতে পেরেছেন। ফলস সিলিং আপনার বাড়ির সৌন্দর্যকে বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করে। বিভিন্ন অফিস শোরুম যেখানে অনেক বেশি আলোর প্রয়োজন সেখানে ফলস সিলিং ব্যবহারের মাধ্যমে খুব সহজেই জায়গাটিকে আরো বেশি উজ্জ্বল করা যায়। 

উপরে আমি ফলস সিলিং এর প্রকারভেদ, দাম এবং ফলস সিলিং এর কয়েকটি ডিজাইন নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আশা করছি আপনারা ফলস সিলিং এর ব্যাপারে খুব ভালো ধারণা পেয়েছেন। ধন্যবাদ সেবার সাথে থাকার জন্য। 

Service app in Bangladesh- Sheba.xyz

Leave a comment

Casinos en Argentina con Depósito Mínimo de 1000 ARS